নয়াদিল্লি: হঠাৎই দেশের করোনা চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল নিজামুদ্দিন। যেন উহান নয়, করোনা ছড়িয়েছে কেবল নিজামুদ্দিন থেকেই । সোশ্যাল সাইটে দিন কতক গেরুয়া শিবিরের লোকজন করোনাকে সামনে রেখেছে বিদ্বেষ চরনোর মওকা হাতছাড়া করেননি।
করোনা ত্রাসের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী যখন আরব দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক দৌত্য মসৃণ করার চেষ্টা করছেন, ঠিক সেই সময়েই নতুন অভিযোগে চরম অস্বস্তিতে সরকার। তবিলিগি জামাত নিয়ে দেশ জুড়ে সোশ্যাল মিডিয়া-সহ বিভিন্ন স্তরে মুসলিম-বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে বলে ভারতের দিকে আঙুল তুলল আন্তর্জাতিক মহল।
আরব দেশগুলিতে প্রায় ৮০ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত বসবাস করেন। নয়াদিল্লি কোনও ভাবেই চায় না সে দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হোক, যাতে দলে দলে ভারতীয়দের আপৎকালীন ভিত্তিতে ফিরিয়ে আনতে হয়। সে কারণে ৬টি আরব দেশের সঙ্গে বারবার ফোনে কথা বলে সে সব দেশে চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মী এবং পর্যাপ্ত ওষুধ পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া করোনা-পরবর্তী সময়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আরবকে পাশে পাওয়া যে জরুরি, সেটাও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মুসলিম সম্প্রদায়ের সব চেয়ে বড় কূটনৈতিক মঞ্চ অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) প্রকাশ্যে ভারতের সমালোচনা করে বলেছে, ‘ভারতে মুসলিম বিদ্বেষের যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিক সে দেশের সরকার। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষিত করা হোক।’ মার্কিন মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু করোনা আক্রান্তদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক ব্যবহার করা হচ্ছে গুজরাতের হাসপাতালে।
ক্ষত মেরামতির জন্য একই সঙ্গে আসরে নেমেছে ভারত সরকার এবং বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য শুনে অবশ্য গেরুয়া শিবিরের বিদ্বেষ বিষ প্রচারকরা বুঝে গিয়েছেন আর সাম্প্রদায়িক প্রচার ঠিক হবে না। ফলে আপাতত রঙে ভঙ্গ দিয়েছেন তারা।বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি ওআইসি-র মন্তব্য সম্পর্কে বলেন, “সংখ্যালঘু এবং মুসলমানদের স্বর্গরাজ্য হল ভারত। তাঁদের সামাজিক অর্থনৈতিক এবং ধর্মীয় অধিকার এখানে সুরক্ষিত। কেউ যদি নিজেদের অন্ধবিশ্বাস থেকে কথা বলে আলাদা কথা। বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই অভিযোগ করা উচিত।”
উল্লেখ্য এই সময়ের মধ্যে পালঘর হত্যা কাণ্ড নিয়েও সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়ানোর চেষ্টা কম হয়নি। মিথ্যা প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে আশার কথা হল তা সফল হয়নি। অনেকের ধারণা এরা সফল হয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মদতে। নেতারা মৌন ও সক্রিয় সমর্থন না দিলে এই চুনো-পুঁটি বিদ্বেষবাজদের কোনও ক্ষমতায় নেই।
আরও পড়ুন: