নয়াদিল্লি: লকডাউনের জন্য বন্ধ গণপরিবহণ। কীভাবে বাড়ি ফিরবেন, তা বুঝতে পারছিলেন না ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকরা। আর পাঁচজনের মতো একই অবস্থা তৈরি হয়েছিল বছর আটত্রিশের রণবীর সিংয়ের। যাতায়াতের কোনও ব্যবস্থা না পেয়ে বাধ্য হয়ে হাঁটতে শুরু করেছিলেন। জোটেনি খাবার। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রাম নিতে হয়েছে রাস্তাতেই। কিন্তু বাড়ি ফেরা হল না রণবীরের। পথেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর।
আরও পড়ুন: করোনা ভাইরাস নিয়ে নয়া তহবিল ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর, অক্ষয় দিলেন ২৫ কোটি
রণবীর সিংহ নামে মধ্যপ্রদেশের ওই যুবকের বাড়ি মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলায়, দিল্লি থেকে দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি।পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, মাসের শেষ দিকে টাকা পয়সা তেমন হাতে ছিল না। আবার টাকা থাকলেও হোটেল, দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাবার জোগাড় করাই সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছিল রণবীরের কাছে। তাই হেঁটেই ঘরে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন আজ নয়তো কাল ঠিক পৌঁছে যাবেন। দিল্লি থেকে ২০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে, তিন দিনে আগ্রা পর্যন্ত চলে এসেছিলেন। কিন্তু, শেষপর্যন্ত জীবিত বাড়ি ফেরা আর হয়ে ওঠেনি ওই ব্যক্তির।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তীব্র গরমে দীর্ঘ পথ হাঁটার ক্লান্তি আর শক্তিক্ষয়ের জেরে আগরার কাছে প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়েন রণবীর। স্থানীয় এক দোকানদার লক্ষ্য করে তাঁকে শুশ্রুষা করার পর চা-বিস্কুট খেতে দেন। কিছুটা সুস্থ বোধ করার পর আবার হাঁটতে শুরু করেন। কিন্তু বাড়ি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: Corona Update: রাজ্যে আরও ২ জনের করোনা, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৭
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকজনকেও জানানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর দেহ বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
লকডাউনের পর সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। যানবাহন সব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে হেঁটেই কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকে পরিবার, শিশু-সন্তান নিয়েও ফিরছেন। আগাম পরিকল্পনা না করে আচমকা লকডাউন ঘোষণা হয়েছে বলে অভিযোগ করে সমালোচনায় সরব হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী-সহ অনেক বিরোধীই। তাঁদের দাবি, এর জেরে মহাসঙ্কটে পড়েছেন এই সব শ্রমিকশ্রেণির মানুষ।
আরও পড়ুন: গেন্দা ফুল ‘চুরি করে’ বড়লোক হলেন বাদশা, উপেক্ষিত বিটি লো-র আসল স্রষ্টা রতন কাহার