ভোপাল: আস্থা ভোট হচ্ছে না মধ্যপ্রদেশে। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন কমলনাথ। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানিয়ে দিলেন, আজই মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালাজি ট্যান্ডনের কাছে ইস্তফা দেবেন তিনি। ১৫ মাসের কংগ্রেস সরকারের পতন হল মধ্যপ্রদেশে। সরকার গড়ার পথে বিজেপি।
কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলি নিজেদের কব্জায় আনতে মোক্ষম কৌশল প্রয়োগ করার বিষয়ে বিজেপির সাম্প্রতিক পদক্ষেপ রাজনীতির আঙিনায় শোরগোল ফেলে দিয়েছে। কয়েক মাস আগেই কর্নাটকে কংগ্রেসকে গদিচ্যুত করে কেন্দ্রের শাসকদল। তারপরে পদ্ম শিবিরের নজর পড়ে মধ্য প্রদেশের উপরে।
আরও পড়ুন: World Happiness Day 2020: করোনা আতঙ্কে ম্লান গোটা বিশ্বের হাসি
গত ১০ মার্চ দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অখুশি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করলে সেই দিনই ইস্তফা দেন সিন্ধিয়া অনুগামী মধ্য প্রদেশের ২২ জন বিধায়ক। তার জেরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা উল্লেখযোগ্য হারে হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় কমল নাথ সরকার।সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নোংরা রাজনীতির খেলা খেলি না।একদিন সত্য প্রকাশ হবে। মানুষ ওদের ক্ষমা করবেন না।’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘গত ১৫ মাসে একাধিক বার আমি সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করেছি। বিজেপি ১৫ বছর ধরে শাসন করছে, আমি মাত্র ১৫ মাস সময় পেয়েছি। একজন নেতার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ২২ জন বিধায়ককে বেঙ্গালুরু নিয়ে গিয়ে আটক করল বিজেপি।’
গত ১৫ মাস ক্ষমতায় থাকাকালীন কমল নাথ সরকার রাজ্যবাসীর জন্য কোনও কাজই করেনি বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। এ দিন সেই অভিযোগ উডি়য়ে দেন কমল নাথ। তিনি বলেন, ‘‘১৫ মাসে ৪০০ প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছি আমরা। তৃতীয় দফায় কৃষিঋণ মকুবের প্রক্রিয়াও শুরু হতে চলেছে। এটাই সহ্য করতে পারেনি বিজেপি। জনমতের বিরুদ্ধে যাঁরা গিয়েছেনস মানুষ তাঁদের ক্ষমা করবেন না।’’
আরও পড়ুন: অবশেষে ফাঁসি হয়ে গেল নির্ভয়ার চার ধর্ষক-হত্যাকারীর
এ দিন দুপুর ২টোয় মধ্য প্রদেশ বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে কংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়। সেই অধিবেশনে আস্থাভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই ইস্তফা ঘোষণা করলেন কমল নাথ। গতকাল রাতে বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন মধ্য প্রদেশ বিধানসভার অধ্যক্ষ নর্মদা প্রসাদ প্রজাপতি। এর ফলে আরও চাপে পড়ে যায় কমল নাথ সরকার।
২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় এই মুহূর্তে আসন সংখ্যায় এগিয়ে বিজেপি-ই। এ দিন দলের বিধায়ক শরদ কউল ইস্তফা দেওয়ার পরও তাদের কাছে ১০৬টি আসন রয়েছে। ২২ জন বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ার পর কংগ্রেসের কাছে রয়েছে ৯২টি আসন। বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি), সমাজবাদী পার্টি (সপা) এবং ৪ নির্দল বিধায়কেরও সমর্থনও রয়েছে তাঁদের কাছে। তাতে ম্যাজিক সংখ্যা ১০৩ পার করা সম্ভব নয়।এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের ওই শরিকদের মধ্যে অনেকেই বিজেপির হাত ধরার কথআ ভাবছেন। খোলাখুলি সে কথা স্বীকারও করেছেন কেউ কেউ।