কলকাতা: করোনার বিরুদ্ধে গোটা দেশ একজোট হয়ে লড়ছে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে রাজনীতি করা ঠিক নয়। সাংবাদিক সম্মেলনে সাফ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের কাছ থেকে পুরোপুরি সাহায্য মিলছে না বলে ক্ষোভ উগরে দেন।
শুক্রবার সকাল ৯ টায় লাইভ ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আবেদন জানিয়েছিলেন, আগামী রবিবার ৫ এপ্রিল রাত ৯ টায় ৯ মিনিটের জন্য বাড়ির আলো নিভিয়ে মোমবাতি বা টর্চ কিংবা প্রদীপ জ্বালাতে। বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আপনার ইচ্ছা হলে আপনি শুনবেন (প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে প্রদীপ জ্বালাবেন), আমার ইচ্ছা হলে আমি ঘুমোব”। সাংবাদিক বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন শোনামাত্র দৃশ্যত বিরক্তি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি এখন করোনা সামলাব নাকি আপনারা রাজনৈতিক যুদ্ধ লাগাবেন। প্লিজ এখন রাজনৈতিক যুদ্ধ লাগাবেন না। আপনাদের যদি মনে হয় প্রধানমন্ত্রী ভাল কথা বলেছেন, আপনারা শুনবেন। আমি কেন প্রধানমন্ত্রীর কথায় নাক গলাতে যাব”।
লকডাউন মানার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন করেন তিনি। আর একবার বলেন, “ঘরের বাইরে অযথা কেউ বেরোবেন না। ঘরে থাকুন। ঘরই আপনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। বাজার করতে গিয়ে দূরত্ব বজায় রাখুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।” রাজ্যবাসীর মনের জোর বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভয় পাবেন না। করোনার বিরুদ্ধে আমরা জিতবই। এর আগে আরও অনেক কঠিন লড়াইয়ে আমরা জিতেছি। এটাতেও জিতব।”
আরও পড়ুন: রেকর্ড গড়ল ‘রামায়ণ’: ২ দিনে ১৭ কোটি মানুষ দেখল তিন দশক পুরোনো সিরিয়াল
তিনি জানান, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য রেশন পরিষেবা, স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। গোটা রাজ্য ক্ষতির মুখে, তারপরও রাজ্য আগামী ২ মাসের পেনশন দিচ্ছে, বেতন ঠিকভাবে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কলকাতা পুলিসের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। কলকাতা পুলিস প্রত্যেকদিন ৫০ ইউনিট রক্ত দিচ্ছে। এদিন রাজ্যবাসীদের আরও মানবিক হওয়ার আবেদন জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এলাকায় করোনা হাসপাতাল তৈরিতে বাধা দেবেন না। করোনায় মৃতদের সত্কার করতে আপত্তি হয়।” সাগরদত্ত হাসপাতালে কেন করোনা রোগীদের চিকিত্সা হবে না, তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সরকার ঠিক করবে কোন কোন হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিত্সা হবে। বাধা দিলে মহামারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার তিন জন সুস্থ হয়েছেন, শুক্রবার আরও ৯ জন বেরোবেন। মোট ১২ জন সুস্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: রেকর্ড ভেঙে ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকায় মৃত ১১৬৯, বিশ্বে ১০ লক্ষ ছাড়াল আক্রান্তের সংখ্যা