নয়াদিল্লি: বাইরে বিপদ করোনা। তাই ঘরে থেকে নিরাপদে বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে জুম, ওয়েব এক্স, গো টু মিটিংয়ের মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। আপাত ভাবে নিরাপদ মনে হলেও, যোগাযোগের সেই রাস্তাতেই লুকিয়ে রয়েছে অন্য বিপদ!
অভিযোগ, গ্রাহকদের তথ্য বিক্রি করে দিচ্ছে ওই সব অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি। উঠছে এমন অভিযোগও। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে হানা দিতে পারে হ্যাকাররা। এই আশঙ্কায় সম্প্রতি এমনই কয়েকটি অনলাইন ভিডিয়ো কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা নিয়ে কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্ক।
জুম একটি মার্কিন সংস্থা। ক্যালিফোর্নিয়ার এই সংস্থা মূলত ভিডিও কমিউনিকেশনের ওপর কাজ করছে। যা ব্যবহার করে সহজেই অনলাইন কনফারেন্স, ওয়েব কনফারেন্স করা যায়। উপভোক্তাদের কাছে এই অ্যাপ ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে লকডাউনে ওয়ার্ক ফ্রম হোমে যারা কাজ করছেন, তাদের জন্য জুম সবথেকে পছন্দের হয়ে উঠেছে। শুধু ব্যক্তি পরিসর নয়, অনেক নামিদামি কর্পোরেট সংস্থা সহ একাধিক ছোট বড় কোম্পানিগুলোও এই অ্যাপ ব্যবহার করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পরিষ্কার করে জানিয়ে দেল, এই অ্যাপ নিরাপদ নয়। ব্যক্তিগত পরিসরেও এই অ্যাপ ব্যবহার করা বিপজ্জনক জানাল সাইবার কর্ডিনেশন সেন্টার।
আরও পড়ুন: গণনায় ভুল! করোনা আঁতুরঘর উহানে করোনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ল ৫০ শতাংশ
বৃহস্পতিবার এক নতুন নির্দেশিকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়ে দিল, ‘‘জুম নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম নয়, এমনকী ব্যক্তিগত ব্যবহারের ক্ষেত্রেও। বিস্তারিত নির্দেশিকা এরই মধ্যে প্রকাশ করেছে সিইআরটি-ইন্ডিয়া।”সরকার জানিয়েছে, এই গাইডলাইন মানলে অবৈধ এন্ট্রি রোখা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ভাইরাসের ভয়ও দূর হবে। ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড ও প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের ক্ষেত্রটি সীমাবদ্ধ করে ‘ডস’ আক্রমণও রোখা সম্ভব হবে। এই অ্যাপটির যে ‘প্রাইভেসি’ সংক্রান্ত এবং নিরাপত্তাজনিত সমস্যা রয়েছে তা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক সিনিয়র আধিকারিক।‘টিকটক’-এর মতো ‘জুম’-এরও অধিকাংশ সার্ভার চিনে অবস্থিত।
করোনা রুখতে যে সব দেশ লকডাউনের পথে হেঁটেছে, সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। আর ওয়েবের এই ভুবনেই ফাঁদ পেতেছে হ্যাকাররা।জুম-সহ একাধিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিস্ফোরক অভিযোগ করেছে সাইবার সুরক্ষা সংস্থা সাইবেল। তাদের দাবি, অ্যাকাউন্ট প্রতি ১৫ পয়সা দরে ৫ লক্ষের বেশি গ্রাহকের ইমেল, পাসওয়ার্ড-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তারা ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে কিনেছে।
সংস্থাটি আরও অভিযোগ করেছে, হ্যাকারদেরও তথ্য বিক্রি করেছে জুম। আর এই দাবি নিয়েই গোটা দুনিয়া জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিজেদের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আঁটোসাঁটো করতে ফেসবুকের প্রাক্তন সুরক্ষা প্রধানকে নিয়োগ করেছে জুম। কিন্তু তাতেও কলঙ্ক ঘোচেনি। শুধু স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কই নয়, ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্স, জার্মানি ও তাইওয়ান সরকারও জুম নামে ওই অনলাইন প্ল্যটফর্মকে নিষিদ্ধ করেছে। ওই প্ল্যাটফর্মটি নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছে আমেরিকার এফবিআই-ও। তবে এ নিয়ে অভিযুক্ত ওই সংস্থাটির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ হবে মে মাসেই, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের