নয়াদিল্লি: শুক্রবার পাঁচটার সময় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথকে। কংগ্রেসের বিদ্রোহী বিধায়করা যদি আস্থা ভোটে অংশগ্রহণ করতে চান, তাহলে তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
দেশজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষিতে গত ১৬ মার্চ মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য় মুলতুবি করে দেন স্পিকার। ফের অধিবেশন ডাকার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চ।শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, বিদ্রোহী বিধায়করা বিধানসভায় উপস্থিত হতে চাইলে তাঁদের নিরাপত্তার সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা করতে হবে কর্নাটক এবং মধ্যপ্রদেশের ডিজিপিকে। গোটা ভোটদান পর্ব ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে হবে।
আরও পড়ুন: করোনার জের, প্রাণ ফিরে পাচ্ছে মানুষের হাতে ক্ষয়ে যাওয়া বিপন্ন প্রকৃতি
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ ঘিরে মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক মহলে চূড়ান্ত তৎপরতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বভাবতই স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি। এদিকে, কংগ্রেসও জানিয়েছে তারা বিধানসভায় অগ্নিপরীক্ষা দিতে প্রস্তুত আছে।আগামিকাল পাঁচটার সময় আস্থাভোট হবে। বিধায়করা হাত দেখিয়ে নিজেদের মতামত জানাবেন ও পুরো কার্যপ্রক্রিয়া ভিডিও রেকর্ড করা হবে বলে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ক ফ্রম হোমে জোর, শিশু-বৃদ্ধরা ঘরে থাকুন: জেনে নিন করোনা রোধে কেন্দ্রের ছয় কড়া দাওয়াই
২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক বর্তমানে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন। এদের মধ্যে ছয়জনের ইস্তফা গৃহীত হয়েছে। আরও ১৬ জন বিধায়কের ইস্তফা যদি গৃহীত হয়, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে কমলনাথের সরকার। কংগ্রেস আস্থাভোট করতে চাইছে না, এই অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে যায় বিজেপি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। কংগ্রেসের দাবি ছিল যে তাদের ২২ বিধায়ককে জোর করে কর্নাটকে আটকে রাখা হয়েছে।সুপ্রিম কোর্ট বলে যে বিধায়কদের জোর করে আটকে রাখা হয়েছে কিনা, সেটি স্পিকার ভিডিওর মাধ্যমে যাচাই করতে পারেন। প্রয়োজনে এটি দেখার জন্য অবজার্ভার রাখার প্রস্তাবও দেন বিচারপতিরা। কিন্তু স্পিকার রাজি হননি। অন্যদিকে বিধায়কদের ইস্তফা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরও দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া উচিত বলে স্পিকারের আর্জি খারিজ করে আদালত।
আরও পড়ুন: রবিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জনতা কারফিউয়ের ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী
বিচারপতি চন্দ্রচূড় ভিডিয়ো কনফারেন্সে বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, ‘‘ওই বিধায়করা স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছেন কি না, তা আমরা যাচাই করে দেখার ব্যবস্থা করতে পারি। আমরা বেঙ্গালুরু বা অন্যত্র একজন পরিদর্শক নিয়োগ করতে পারি, যার মাধ্যমে আপনি ভিডিয়ো কনফারেন্সে বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’’
কিন্তু দু’সপ্তাহের সময় চান স্পিকার। তাঁর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে বলেন, আমাকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দু’সপ্তাহ সময় দিন। বিদ্রোহী বিধায়কদের মধ্যপ্রদেশে বাড়িতে ফিরতে দিন। ওঁরা পরিবার থেকে দূরে অস্বাভাবিক পরিবেশে বসবাস করছেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সের শুধুমাত্র একটি ধারণা পাওয়া যাবে।’’ এর পরেই বিচারপতি চন্দ্রচূড় ঘোড়া কেনাবেচার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘এক একটা সপ্তাহ ঘোড়া কেনাবেচার জন্য সোনার খনির মতো। সেই কারণেই দ্রুত আস্থা ভোট করাতে সক্রিয় আদালত। উদ্দেশ্য হল, সংশ্লিষ্ট সবাইকেই সেই ভাবে সক্রিয় হয়ে যাতে দ্রুত আস্থা ভোট করানো যায়, সে বিষয়ে সক্রিয় হতে হবে।’’