ইটানগর ঃ আদিবাসীদের স্থায়ী বাসিন্দা শংসাপত্র দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল অরুণাচল প্রদেশের ইটানগর। জারি করা হয়েছে কার্ফু৷ শহরের সর্বত্র টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী৷ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অরুণাচলের রাজধানী ইটানগরের ইন্টারনেট পরিসেবা৷
কিছুদিন আগে রাজ্য সরকার অরুণাচলের ছয় সম্প্রদায়কে স্থায়ী বাসিন্দা শংসাপত্র দেওয়ার কথা জানায়৷ সরকার নিযুক্ত প্যানেল এই মর্মে সুবিধাভোগীদের তালিকাও প্রকাশ করে৷ এই প্রকাশিত তালিকারই বিরোধীতায় অন্যান্য সম্প্রদায়৷ তাদের দাবি, কেন ওই ছয়’সম্প্রদায় ছাড়া অন্যান্যরা স্থায়ী বাসিন্দা শংসাপত্র পাবে না? পালটাতে হবে প্রকাশিত তালিকা৷ উল্লেখ্য, যে ছ’টি সম্প্রদায়কে পিআরসি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল, সেগুলি হল দেওরি, সোনোওয়াল কাছারি, মোরান, আদিবাসী, মিশিং এবং গোর্খা।
অ-অরুণাচলিদের পার্মানেন্ট রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট (পিআরসি) চালু করার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার থেকে ভূমিপুত্র জনজাতিদের ১৮টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চের ডাকে ৪৮ ঘণ্টার বন্ধের পরেও সরকারের অনমনীয় মনোভাবে গত কাল রাত থেকে মারমুখী হয়ে ওঠে আন্দোলনকারীরা। বিধানসভা ও সচিবালয় ঘেরাও করা হয় পাশাপাশি চলে ভাঙচুর। প্রথম অরুণাচল ফিল্মোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বানচাল হয়ে যায়। গভীর রাত পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী-সহ মন্ত্রী, বিধায়করা ঘেরাওয়ে আটকে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করে। তাতেও পরিস্থিতি আয়ত্তে না আসায় শূন্যে গুলি ছোড়া হয়। পুলিশের গুলিতে এক বিক্ষোভকারী জখম হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ম্যাজিস্ট্রেট, সিআরপিএফের গাড়িতে আগুন লাগান হয়। সচিবালয়ের দরজা ভাঙার চেষ্টা হতে থাকে। আক্রমণের মুখে পড়েন সাংবাদিকরাও। সরকার মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়।বিষয়টি নিয়ে নরম মনোভাব নেওয়ায় গতকাল ছাত্র সংগঠন আপসু ও নিসি ছাত্র সংগঠনের দফতরেও ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীরা প্রায় ৫০ টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ভাঙচুর করা হয়েছে ১০০ গাড়ি। বিক্ষোভকারীদের পাথরের আঘাতে আহত হয়েছেন ৩৫ জন।
প্রবল বিক্ষোভের মুখে বাধ্য হয়েই রাতে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, পিআরসি সংক্রান্ত বিষয় চলতি বিধানসভায় উত্থাপন করা হচ্ছে না। সরকারের এই ঘোষণার পরে রাত দেড়টা নাগাদ সচিবালয় ঘেরাও মুক্ত হয়। তবে পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত। সেনাবাহিনীর ডোগরা রেজিমেন্টকে ডাকা হয়েছে। তারা ফ্ল্যাগ মার্চ করছে। জখম আন্দোলনকারীর রবিবার ভোররাতে মৃত্যু হয়েছে। সেই খবরে আবার নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।