অনিলের জেল যাত্রা রুখতে এগিয়ে এলেন মুকেশ অম্বানী, এরিকসনের বকেয়া ৪৬২ কোটি মেটাল রিলায়্যান্স

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নয়াদিল্লি: সময়সীমা ছিল মঙ্গলবার পর্যন্ত। তার একদিন আগে সুইডিশ টেলিকম সংস্থা এরিকসন ইন্ডিয়ার বকেয়া ৪৬২ কোটি টাকা মিটিয়ে দিল অনিল অম্বানীর রিল্যায়ান্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড (আরকম) সংস্থা। সোমবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে তা নিশ্চিত করেছেন এরিকসন ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র।পুরনো বিবাদ ভুলে ভাইয়ের বিপত্তিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন দাদা। ৫৫০ আর্থিক বকেয়া মিটিয়ে দিলেন দাদা মুকেশ অম্বানী।এক বিবৃতি দিয়ে অনিল জানিয়েছেন , দাদা মুকেশ অম্বানি ও বৌদি নীতা অম্বানির জন্যই সময়মতো দেনা শোধ করতে পারলেন তিনি।

২০১৪ সালে সুইডিশ সংস্থা এরিকসনের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছিল রিলায়্যান্সের। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ৭ বছরের জন্য এ দেশে রিলায়্যান্সের টেলিকম নেটওয়ার্ক সামলানোর ভার হাতে পায় এরিকসন। কিন্তু, সে বছর থেকেই বকেয়া ১৫০০ কোটি টাকা পাওনা না মেটানোয় রিলায়্যান্সের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপীলেট ট্রাইব্যুনাল (এনসিএলএটি)-এর দ্বারস্থ হয় এরিকসন। সেই মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শেষমেশ ১৫০০ কোটি টাকার পরিবর্তে ৫৫০ কোটিতে গোটা বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ায় রফা হয় দুই সংস্থার মধ্যে। গত ৩০ মে-তে রিলায়্যান্সকে ১২০ দিনের মধ্যে ওই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তবে তা মেটাতেও গড়িমসি ছিল রিলায়্যান্সের। এর পর ফের আদালতে যায় এরিকসন। ফেব্রুয়ারিতে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন অনিল। আদালত নির্দেশ দেয়, ১৯ মার্চের মধ্যে বকেয়া না মেটালে জেলে যেতে হবে অনিল অম্বানীকে।

কেন এরিকসনকে পাওনা মেটাতে পারছেন না তার কারণ হিসাবে অনিল কোর্টে বলেন, বড়ভাই মুকেশ অম্বানির রিলায়েন্স জিও-র সঙ্গে সম্পত্তি কেনাবেচা নিয়ে তিনি কোনও সমঝোতায় আসতে পারেননি। সেজন্য তাঁর কোম্পানিকে দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কোম্পানির তহবিল তাঁর হাতে নেই। তিনি ঋণ শোধ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

এরিকসন পালটা যুক্তি দেখায়, রাফায়েল জেট নির্মাণে বিনিয়োগ করার জন্য যদি অনিলের হাতে টাকা থাকে, তাহলে তিনি তাদের পাওনা মেটাচ্ছেন না কেন? রাফায়েল চুক্তিতে ফ্রান্সের দাসো কোম্পানির অফসেট পার্টনার হয়েছে অনিল অম্বানির সংস্থা। যদিও বিরোধীরা ওই চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন।

গত ২৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট অনিলকে নির্দেশ দেয়, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এরিকসনকে পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে। না হলে বাৎসরিক সুদ দিতে হবে ১২ শতাংশ হারে। কিন্তু অনিল ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দেনা শোধ করেননি। সুপ্রিম কোর্ট তখন তাঁকে তিরস্কার করে বলে, ইচ্ছা করেই তিনি ঋণ শোধ করছেন না। তাঁকে এবং আরকমের অপর দুই ডিরেক্টরকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা দিতে বলা হয়।এ দিন সুইডিশ সংস্থা এরিকসনকে সুদ-সহ প্রায় ৫৮০ কোটি টাকা দিয়েছে রিলায়্যান্স। এর ফলে জেলযাত্রা এড়াতে পারলেন অনিল অম্বানী। তবে এক দিন বাকি থাকতেই সেই বকেয়া মিটিয়ে দিলেন অনিল। সৌজন্যে, দাদা মুকেশ অম্বানী।

বিবৃতিতে অনিল লিখেছেন, “এই বিপদের সময়ে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য দাদা-বৌদি মুকেশ ও নীতাকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধের প্রতি আস্থা রাখা এবং এই সময়োচিত সৌজন্যের জন্য ধন্যবাদ। আমি এবং আমার পরিবার কৃতজ্ঞ যে আমরা অতীত ভুলে এগিয়ে গিয়েছি, এই সৌজন্যবোধে আমি অভিভূত।” ২০০২ সালে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ধীরুভাই অম্বানীর মৃত্যুর পর তাঁর দুই ছেলে অনিল ও মুকেশের সম্পর্ক তিক্ত হতে থাকে। এক সময় ওই গোষ্ঠীর ব্যবসার দায়িত্ব ভাগাভাগি করে দেখতে শুরু করেন অনিল ও মুকেশ। তবে এ দিন মুকেশের সৌজন্যে অতীত ভুলে যেন এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেখা গেল।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest