#ভাটপাড়া: ফের রণক্ষেত্র ভাটপাড়া। বৃহস্পতিবার গুলি-বোমাবাজিতে নিহতদের (ধরমবীর সাউ ও রামবাবু সাউ) মৃতদেহ নিয়ে শুক্রবার মিছিল করে বিজেপি। মিছিল থেকে উঠছে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। মিছিলের নেতৃত্বে রয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং, ভাটপাড়ার বিধায়ক তথা অর্জুন-পুত্র পবন সিং এবং সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূল বিধাক তথা অর্জুনের ভগ্নিপতি সুনীল সিং। এই মিছিল ঘিরেই ভাটপাড়ার ঘোষপাড়া এলাকায় পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। পুলিসের দিকে তেড়ে যান কমব্যাট ফোর্স ও র্যাফের জওয়ানদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেট ছোড়ে কয়েকজন যুবক। লাঠি-রড বেরিয়ে আসেন তাঁরা। পিছু হটে পুলিস। পড়ে যান র্যাফের কয়েকজন জওয়ান। ইটের ঘায়ে জখম হয়েছেন অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিস।
বৃহস্পতিবার পুলিশের গুলিতে দু’জনের মৃত্যুর জন্য বিজেপির তরফে বারাকপুর কমিশনারের অফিস ঘেরাও করা হয়।নেতৃত্ব দেন সাংসদ অর্জুন সিং। ছিলে ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন সিং, সদ্য তৃনমূল থেকে বিজেপিতে আসা নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং, ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান সৌরভ সিং। এই সময়েই মারাত্মক অভিযোগ তোলেন অর্জুন সিং। তিনি বলেন, “আমি সূত্র মারফৎ জানতে পেরেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে বলেছেন বেছে বেছে বিজেপির লোকজনকে গুলি করতে হবে।” তিনি বলেন প্রশ্ন তোলেন, “এত বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র আসছে কী করে? পুলিশ কী ভূমিকা পালন করছে? খাগড়াগড়ে যদি এনআইএ তদন্ত হতে পারে, তাহলে এখানে হবে না কেন? আমি এনআইএ-কে দিয়ে তদন্তের দাবি করছি।”
এদিন মরদেহ নিয়ে মিছিলের সময়ে রাস্তায় দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপরে যে বিজেপি কর্মীরা আক্রামণাত্মক হয়ে ওঠে তা স্বীকার করে নেন অর্জুন সিং। এ নিয়ে স্থানীয় সাংসদের বক্তব্য, “বিজেপির কর্মীদের বিক্ষোভ অকারণে নয়। পুলিশের গুলিতেই দুই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তার জন্যই বিক্ষোভ।” এমনিতেই ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা লাগু রয়েছে। এর পরেও এদিনের উত্তেজনা ঘিরে গোটা এলাকায় বনধের চেহারা নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার এক যুবকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই দফায় দফায় বোমাবাজিতে অশান্ত হয়ে ওঠে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল এলাকার ভাটপাড়া। বৃহস্পতিবার সেই অশান্তি তুঙ্গে ওঠে। নতুন থানার উদ্বোধন ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ভাটপাড়া। থানার ২০০ গজের মধ্যে চলে গুলি ও বোমাবাজি। অশান্তিতে ইতিমধ্যে নিহত দুই। দুষ্কৃতিরাজের জন্য ‘খ্যাত’ এই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এলাকায় নামানো হয় র্যাফ।