ওয়েব ডেস্ক: দেশের অর্থনৈতিক মন্দার ছবিটা ঠিক কেমন তা গত সপ্তাহে সরকারের দেওয়া একটি পরিসংখ্যান থেকে মোটামুটি বোঝা গিয়েছিল। সরকার জানিয়েছিল, গত ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে ৫ শতাংশে। পরিস্থিতি যে সত্যিই ভয়াবহ, সোমবার তা আরও স্পষ্ট হল। জানা গেল, জুলাই মাসে দেশের প্রধান আটটি শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদনে বৃদ্ধির হার কমে ২.১ শতাংশে নেমে এসেছে।
হিসেব অনুযায়ী, শিল্পোৎপাদন ক্ষেত্রে গত ১৫ মাসের হিসেব অনুযায়ী ধীরতম বৃদ্ধি ঘটেছে গত অগস্ট মাসে। পাশাপাশি, চাহিদা ও উৎপাদনের হারের ক্ষেত্রেও দুর্বলতম বৃদ্ধির হার দেখা গিয়েছে। সোমবার এক বেসরকারি সমীক্ষায় মিলেছে এই পরিসংখ্যান।
কিছু দিন আগে পরিসংখ্যান ও প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, গত ত্রৈমাসিকে বার্ষিক বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫%, যা গত গত ৬ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে ধীরতম। আইএইচএস মার্কিট সংস্থা সংকলিত নিক্কেই ম্যানুফ্যাকচারিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স গত দুলাই মাসে ৫২.৫ থেকে নেমে গত অগস্ট মাসে দাঁড়ায় ৫১.৪, যা ২০১৮ সালের মে মাসের পরে নিম্নতম।
শিল্পে উৎপাদনের সূচক তথা ইন্ডেক্স অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশনের ক্ষেত্রে চল্লিশ শতাংশ গুরুত্ব দেওয়া হয় কোর সেক্টরকে। এর মধ্যে আটটি প্রধান শিল্প রয়েছে,–কয়লা, বিদ্যুৎ উৎপাদন, কাঁচা পেট্রোলিয়াম তেলের পরিশোধন ইত্যাদি।
সোমবার সরকার জানিয়েছে, কয়লা, কাঁচা তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং পরিশোধনাগারে উৎপাদনে বৃদ্ধির হার জুলাই মাসে ছিল নেগেটিভ। অর্থাৎ আগের থেকে উৎপাদন কমেছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর জুলাইয়ে কোর সেক্টরের বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৩ শতাংশ। সেখান থেকে বৃদ্ধির হার এতটা নীচে নেমে যাওয়া উদ্বেগজনক বলেই মনে করা হচ্ছে।
যদিও সামগ্রিক ভাবে জুলাই মাসে শিল্পোৎপাদনে বৃদ্ধির হার কত ছিল তা এখনও পরিসংখ্যান মন্ত্রক জানায়নি। তা এ মাসের শেষে জানা যাবে বলে মন্ত্রক জানিয়েছে। তবে জুলাইতে বৃদ্ধির হার কমই থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, জুন মাসে শিল্পোৎপাদনে বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ২ শতাংশ।
সন্দেহ নেই এই সব পরিসংখ্যান কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ক্রমশই চাপে ফেলে দিচ্ছে। দেশে আচ্ছে দিন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু অর্থনীতির বর্তমান ছবিটা দেখে আচ্ছে দিন যে বলা যাচ্ছে না, তা ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারাও।