নয়াদিল্লি: বিজেপিতে বৃদ্ধদের কোন জায়গা নেই। ৭৫ পেরোলেই রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিতেই হবে। এই যুক্তিতে আডবানী -যোশীদের মত বিজেপির এককালের স্তম্ভগুলো আস্তে আস্তে ছেঁটে ফেলা হয়েছে কেবল বয়সের কথা বলে। এবার কি তাহলে সুমিত্রা মহাজনের পালা? বেশ কয়েকদিন ধরেই এই প্রশ্ন ঘুরছিল জাতীয রাজনীতিতে। উত্তর মিলল শুক্রবার। ‘ভোটে দাঁড়াচ্ছি না’ বলে জানিয়ে দিলেন ইন্দোর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুমিত্রা মহাজন ।
শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে সুমিত্রা জানান, “আমার প্রার্থী হওয়া নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। আমাকে প্রার্থী করা হবে কি না, সে নিয়ে দলের ভিতরই গুঞ্জন অব্যাহত। তা থেকে মুক্তি দিতেই আমি জানাতে চাই, এ বারের লোকসভা ভোটে আমি প্রার্থী হতে চাই না। বাকিটা সিদ্ধান্ত নেবে দল”। ১৯৮৯ সাল থেকে টানা ইন্দোর থেকে ভোটে জেতা সুমিত্রা মহাজন একটি খোলা চিঠি লিখে এ আসনে প্রার্থী ঘোষণায় দেরি হচ্ছে কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, ‘আমি ভাবলাম দল হয়ত আমার জন্যেই দোনোমোনা করছে, সে জন্য আমি আমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি।’
সুমিত্রা মহাজনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কি ভোটে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন কিন্তু পার্টি তাঁকে টিকিট দেয়নি? উত্তরে বিজেপির এই বর্ষীয়ান নেত্রী বলেন,‘আমি রাজনৈতিক মানুষ নই। আমি আমার বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছি।আমি জানতাম দল বয়সের হিসেব করছে।’ তিনি আহত হয়েছেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, সুমিত্রা মহাজন বলেন,‘আমার আর কিছু বলার নেই।’ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের চাপেই কি ‘বাধ্যতামূলক রাজনৈতিক সন্ন্যাস’-এর পথ বেঁচে নিলেন তিনি? এই প্রশ্নের উত্তরেও নীরব থেকেছেন লোকসভার বিদায়ী স্পিকার।
বর্তমানে সুমিত্রার বয়স ৭৫ বছর। সামনে মাসে তিনি ছিয়াত্তরের পা দেবেন।বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাকেশ সিং আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে এবার আর সুমিত্রার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে না। সেই বার্তাও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে স্পিকারকে। তারপরই দলের সঙ্গে দূরুত্ব বাড়িয়েছিলেন তিনি। সুমিত্রা হলেন বিজেপির হাতেগোনা কয়েকজন নেতাদের মধ্যে একজন যিনি এখনও নামের আগে চৌকিদার ব্যবহার করেননি। গত রবিবার ইন্দোরে বিজেপির পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে ম্যায় ভি চৌকিদার নামক অনুষ্ঠানের। তাতেও গরহাজির ছিলেন বর্তমান স্পিকার।
গত মাসে এক দলীয় সভায় , “ইন্দোর থেকে হয় আমি নয়ত নরেন্দ্র মোদী” – বলে নিজের প্রাথী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন সুমিত্রা। যদিও তাতে গুরুত্ব দেয়নি দল। পরে বিষয়টি সামাল দিতে তিনি বলেন, এ কথা তিনি বলেছি মজা করার জন্যই। সুমিত্রা মহাজনের এই রাজনৈতিক সন্ন্যাসের পর ইন্দোর থেকে কারা প্রার্থী হতে পারেন, সে নিয়ে বেশ কয়েকটি নাম ঘোরাফেরা করছে। এর মধ্যে রয়েছে, ইন্দোরের মেয়র এবং বিধায়ক মালিনী গৌড়, আরেক বিধায়ক ঊষা ঠাকুর, বিজেপি সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, প্রাক্তন বিধায়ক ভাঁওয়ার সিং শেখাওয়াত এবং ইন্দোর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর লালওয়ানির নাম।