নয়াদিল্লি: দেশে যে কোন হিংসাত্মক পরিস্থিতিতে যাদের সবার আগে নামানো হয় তারা হল সিআরপিএফ। দেশের জন্য, দেশের অভ্যন্তরে ও সীমান্তে সর্বদায় প্রাণ বাজি রাখেন এই জওয়ানরা। জানা গিয়েছে,পুলওয়ামা হামলার কিছুদিন আগেই তাদের বেতন বাড়ানোর দাবির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়েছিল মোদি সরকার।
সিআরপিএফ এবং সেন্ট্রাল আর্ম ফোর্স দাবি করেছিল তাদের বেতন বৃদ্ধি করতে হবে কিন্তু সরকার নারাজ। দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। সেখান থেকে গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রের দাবি, আধাসেনাদের এই যুক্তি মানা যায় না ।এই দাবি কেবলমাত্র আইএএসরা করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী বারবার দাবি করেছেন, তার সময় সেনাদের সম্মান ও মর্যাদা বেড়েছে অথচ তার সহকারী যুক্তি দিল যে সিআরপিএফ এবং সিএপিএফ – আই এসদের মত অরগানাইজ গ্রুপ এ’র সার্ভিসে পড়ে না। সোমবার ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল উদ্বোধন করতে এসে প্রধানমন্ত্রী বলেন,’আজ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে আগ্রহী বহু শক্তিশালী দেশ। তবে এসব অর্জন করতে হয়েছে সেনাবাহিনীকে। কুড়ি শতাংশ মহিলা নিয়োগের নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এক পদ এক পেনশন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সেনার বেতন বেড়েছে ৫৫% । নিয়ন্ত্রণরেখায় আহত হলেও চালু হয়েছে পেনশন। সেনাদের জন্য সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে। এখন বুলেট প্রুফ জ্যাকেট -এর দাবি উঠছে তাও সরকার পরিকল্পনা করছে।’ কংগ্রেস সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,’২০০৯ সালে দাবি উঠেছিল বুলেট প্রুফ জ্যাকেট -এর। কিন্তু তৎকালীন সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমরা সেনাদের জন্য বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, বিশেষ প্রযুক্তির জুতো বরাদ্দের পরিকল্পনা করেছি আমাদের সরকার সবার আগে দেশের স্বার্থ দেখে দেশের সুরক্ষা স্বার্থ দেখেন।’
যদিও বাস্তব সে কথা বলছে না পুলওয়ামা হামলার কিছুদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যায়। মোদি সরকার বারবার নিজেদের সেনা দরদী হিসেবে তুলে ধরেছে অথচ লাগাতার প্রাণ দেওয়া আধা সেনাদের বেতন বৃদ্ধি প্রমোশন এর বিরোধিতা করেছে তার সরকার। ডিরেক্টর জেনারেল প্রণয় জানিয়েছেন,’সেনার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করি আমরা অথচ আমাদের মাইনে কম সুযোগ সুবিধা সেনার থেকে অনেকটাই কম। আমাদের যথাযথ ট্রেনিং-ও হয় না।’ এক্স প্যারা মিলিটারি ফোর্স এর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভাপতি রনবীর সিং জানিয়েছেন,’একজন নিচু পদমর্যাদার সেনাও সম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সি আর পি এফ এর থেকে দেড় গুণ বেশি মাইনে পান।’
ইন্ডিয়া টুডে কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাক্তন সিআরপিএফ ডিরেক্টর জেনারেল জানিয়েছেন,’ কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা সেনাদের পাশে থাকি কিন্তু পূর্ণ সেনার মর্যাদা পাই না। একথা ঠিক যে দেহের মধ্যে হৃদয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ কিন্তু তা বলে হাঁটুকে গুরুত্বহীন ভাবা উচিত নয়। সিআরপিএফদের ভালো করে থাকার জায়গাটুকু জোটে না সে কারণে নিজেদের টাকা খরচ করে পরিবার নিয়ে অন্যত্র থাকেন তারা।
যদিও বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র।