আপাতত মতুয়া মহাসংঘের প্রধান মমতাবালা, মানতে নারাজ বড়মার নাতি শান্তনু ঠাকুর

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ঠাকুরনগর : মতুয়া মহাসংঘের নতুন প্রধান হিসাবে মমতাবালা ঠাকুরের নাম ঘোষণা করল সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসংঘ। তবে মহাসংঘের এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ বড়মার নাতি শান্তনু ঠাকুর।

দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধ্যকজনিত রোগে ভুগছিলেন বড়মা৷ গত বৃহস্পতিবার অসুস্থতা বাড়ে তাঁর৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ভরতি করা হয় হাসপাতালে৷ অবস্থার অবনতি হওয়ায় এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয় বড়মাকে৷ মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএমে গিয়ে বীণাপাণি দেবীর সঙ্গে দেখা করেন৷ মঙ্গলবার রাত ৮.৫২ মিনিটে মারা যান বড়মা৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, বুধবার সকালেই এসএসকেএম থেকে বীণাপাণি দেবীর মরদেহ যশোর রোড হয়ে পৌঁছায় তাঁর ঠাকুরনগরের বাড়িতে৷ সেখানেই রাতভর নাটমন্দিরে শায়িত রাখা হয় নিথর বড়মাকে৷ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর দেহ নিয়ে মৌন মিছিল বের করা হয়৷ শোকসংগীত, কীর্তনের পর এদিন বিকালে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গান স্যালুটের মাধ্যমে অন্ত্যেষ্টি হয় বড়মার৷

৫ মার্চ বড়মার মৃত্যুর পর থেকেই ঠাকুর পরিবারের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়।
বড়মার শেষকৃত্যের সময়সূচি এবং নিয়মবিধি নিয়ে পরিবারের মধ্যে মতান্তর শুরু হয়েছিল। বড়মার ছোটো ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর অভিযোগ করেছিলেন, “বাড়াবাড়ি করছে প্রশাসন।” একই সুর ছিল নাতি শান্তনু ঠাকুরের গলাতেও।  শেষকৃত্যের আগেও প্রশাসনের সঙ্গে বচসা বাধে শান্তনু ঠাকুরের। মরদেহ নিয়ে শোকযাত্রা বের হলেও তা ফিরিয়ে আনা হয় ঠাকুরবাড়িতে। প্রায় ১০ মিনিট আলোচনায় রফাসূত্র বের হলে ফের শুরু হয় শোকযাত্রা।বড়মার মুখাগ্নির পর ক্ষমতার দখল নিয়ে পারিবারিক কলহ ফের প্রকাশ্যে এসে পরে।

বড়মাই ছিলেন মতুয়া মহাসংঘের প্রধান৷ তাঁর মৃত্যুর পর কে প্রধান হবেন, সেই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছিল৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে বীণাপাণিদেবীর অন্ত্যেষ্টির পর মতুয়া মহাসঙ্ঘের তরফে জানানো হয়েছেআপাতত কিছু দিন সঙ্ঘাধিপতি ও উপদেষ্টার যৌথ দায়িত্ব সামলাবেন বড়মার পুত্রবধূ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। সঙ্ঘের তরফে অন্যতম মুখপাত্র নন্দদুলাল মোহন্ত জানিয়েছেন, “বড়মার পারলৌকিক কাজ মিটে যাওয়ার পর সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের কার্যনির্বাহী কমিটি বসে পরবর্তী স্থায়ী সঙ্ঘাধিপতি ঠিক করবে। ততদিন পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত হিসেবে এই দায়িত্ব সামলাবেন মমতাবালা ঠাকুর।”

যদিও এই সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন প্রয়াত বড়মার নাতি শান্তনু ঠাকুর। মমতাবালাকে অস্থায়ী সঙ্ঘাধিপতি করার পর তাই চাপা উত্তেজনা ঠাকুরবাড়িতে। ইতিমধ্যেই শান্তনু জানিয়েছেন, “মতুয়া মহাসঙ্ঘের নিয়মানুযায়ী ঠাকুর বংশের কোনও বংশধরই সেই দায়িত্ব পাবেন।” তিনি স্পষ্ট বোঝাতে চেয়েছেন, তাঁর বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরই এক এবং একমাত্র উত্তরাধিকারী। তাই নন্দদুলালদের ঘোষণা মেনে নেওয়ার প্রশ্ন নেই। কারণ, তৃণমূল প্রভাব খাটিয়ে ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করিয়েছে।বস্তুত, মতুয়া সমাজ চিরকালই রাজনৈতিক দলগুলির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলায় এমন কিছু বিধানসভা এবং লোকসভা আসন রয়েছে যেগুলি নিয়ন্ত্রিত হয় মতুয়া ভোটে। এ বার সেই মতুয়া সমাজকে কৌশলে পাশে পেতে সচেষ্ট বিজেপি।তাই বড়মার পর সংঘাধিপতি পদে কে বসছেন, সেদিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলেরও। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল সাংসদ মমতাবালার এই পদে বসা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest