নয়াদিল্লি : রাফাল মামলার শুনানি হবে প্রকাশ্য আদালতে। মঙ্গলবার দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস কে কাউল এবং বিচারপতি কে এম জোসেফের ডিভিশন বেঞ্চ রাফাল রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনে সম্মতি দিয়েছে। জানানো হয়েছে ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রাফাল রায়ের পুনর্বিবেচনার সময় এজলাসের দরজা খোলা থাকবে সকলের জন্য।
বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে রাফাল নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। এ ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সরব কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। ডিসেম্বর মাসে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দেয় রাফাল নিয়ে তদন্ত করার কোন প্রয়োজন নেই। ১৪ ডিসেম্বরের সুপ্রিম রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা যশবন্ত সিং, অরুণ শৌরি এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। এছাড়াও আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংও রাফাল রায়কে চ্যালেঞ্জ একটি আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনকারীদের দাবি, সরকারের দেওয়া ‘অসত্য তথ্যে’র উপর ভিত্তি করেই ২৪ ডিসেম্বর রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাই আদালতের উচিত এই মামলাটি নতুন করে শোনা। এদিন, সেই আবেদনের প্রকাশ্য শুনানিতেই সায় দিল আদালত।নতুন করে আবেদন করার মূল কারণ হল ক্যাগ রিপোর্ট। আদালত রায় দেওয়ার সময় বিচারপতিরা বলেন রিপোর্ট ইতিমধ্যেই লোকসভায় পেশ হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের কথা। আদতে রিপোর্টটি সংসদে পেশ হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে রায় খতিয়ে দেখার পাশাপাশি এ নিয়ে জমা পড়া প্রত্যেকটি আবেদনেরই শুনানি হবে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি আবেদন রয়েছে। আদালতে ক্যাগের রিপোর্ট জমা পড়া সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছিল। ভুল ছিল বলে সেটি শুধরে নেওয়ার আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
উল্লেখ্য্, গত ১৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট ৩৬টি রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনার ব্যাপারে অনিয়ম হয়েছে বলে যে সমস্ত জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল, সেগুলি সবই খারিজ করে দেয় আদালত। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে গঠিত তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের চুক্তি প্রক্রিয়ায় আদালত সন্তুষ্ট। এই চুক্তিতে কোনওরকম হস্তক্ষেপ করা হবে না বলে জানিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। গত ১৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে রাফাল রায়ে কেন্দ্র স্বস্তি পেলেও, এ ইস্যুতে মোদী সরকারকে বিঁধতে ছাড়েননি রাহুল গান্ধীরা। কখনও তিনি বলেছেন, ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’, আবার কখনও মোদীকে ‘অনিল অম্বানির মিডলম্যান’ বলে কটাক্ষ করেছেন রাগা। এমতাবস্থায় রাফাল রায়ের পুনর্বিবেচনা এমনিতেই মোদী সরকারের জন্য অস্বস্তির। তার উপর সেই শুনানি জনসমক্ষে হওয়ায় অস্বস্তির মাত্রা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।