প্রত্যাশিতভাবেই কলকাতা পুরসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ড দখলে রাখল তৃণমূল। গতবারের থেকে দ্বিগুণেরও বেশি ভোটে জিতলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মোট ২২ হাজার ভোটের মধ্যে ফিরহাদ পেয়েছেন ১৬ হাজার ৫৬৪ ভোট। ১৩ হাজার ৯৮৭ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন তিনি। যা গত বারের ব্যবধানের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। বৃহস্পতিবার কাউন্সিলর হিসাবে শপথ নেবেন তিনি।
এই জয়ের জন্য সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফিরহাদ৷ তিনি জানান, মানুষ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবাসেন তাই মানুষের আশীর্বাদ তাঁর উপরেও রয়েছে৷ কলকাতার মানুষের জন্য আরও বেশি করে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি৷ এই নির্বাচনেও দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেও ভোট কমেছে বিজেপির৷ গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী জীবন কুমার সেনের প্রাপ্ত ভোট ২৫৭৭টি৷ এদিন বিজেপিরও সমালোচনা করেন ফিরহাদ হাকিম৷ মেয়র জানান, মানুষের থেকে দূরে সরে গিয়েছে বিজেপি৷ মানুষ তাঁদের উপর বিরক্ত৷ তাই উপ-নির্বাচনে তাঁদের ভোট কমেছে৷ যতদিন ওরা কেন্দ্রের ক্ষমতায় রয়েছে লাফালাফি করবে৷ ২০১৯-এর পর সেটাও ফিনিশ হয়ে যাবে৷ সিপিআই প্রার্থী শিশিরকুমার দত্ত পেয়েছেন ১ হাজার ৭৩৫ ভোট। কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ৫৩৭ ভোট।বুধবার সকালেই আলিপুর ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের বাইরে হাজির হয়েছিলেন ফিরহাদের অনুগামীরা। ভোটের ফল প্রকাশিত হতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন তাঁরা। চলে আবির খেলা।ভোটের ফল প্রকাশের কিছু ক্ষণের মধ্যে আলিপুর ট্রেজারিতে পৌঁছন ফিরহাদ। এই জয়ে উচ্ছ্বসিত তিনিও। ফিরহাদ বলেন,’প্রথম থেকেই বলেছিলাম এই নির্বাচনে জিতব। চেতলার মানুষের ভালবাসা যে আমার সঙ্গে রয়েছে সেটাই আবার প্রমাণিত হল।’
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফা দেওয়ার পর কলকাতা পুরসভার মেয়র হয়েছেন ফিরহাদ। কিন্তু, তিনি কাউন্সিলর ছিলেন না। সংশোধিত পুর আইনে কাউন্সিলর না হয়েও কলকাতা পুরসভার মেয়র হওয়া যায়। কিন্তু, শপথ গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে শহরের যে কোনও একটি ওয়ার্ড থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হতে হবে।বার্ধক্যজনিত কারণে গত বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পদত্যাগ করেন ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রণব বিশ্বাস। তাঁর ছেড়ে আসা আসনেই ফের এবার তৃণমূলের প্রার্থী ফিরহাদ হাকিম৷গত ৬ জানুয়ারি, কলকাতা পুর নিগমের ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ পর্ব চলে৷ ৪২টি পোলিং স্টেশনে চলে ভোটগ্রহণ। পোলিং প্রেমিসেস ১২টি। ৩৩, ৫৬৭ জন ভোটার ভাগ্য নির্ধারণ করে মেয়রের৷
উল্লেখ্য, ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের ঘরের ছেলে ফিরহাদ হাকিম৷ চেতলাতেই ছোট থেকে রয়েছেন ববি হাকিম। এলাকা তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে, মন্ত্রিত্ব-জীবনের এই পর্যায়ে সব সময়ই চেতলাবাসীকে পাশে পেয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। বাম আমলেও এই ওয়ার্ড থেকে পুর প্রতিনিধি নির্বাচিত হন তিনি৷ এখান থেকেই ২০০০ সালে প্রথম কাউন্সিলর হন ফিরহাদ। ২০১০ সালে হন মেয়র পারিষদ। ২০০০ সালে তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল ৯ হাজার৷ পাঁচ বছর পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ হাজারে৷ অর্থাৎ ভোটের ব্যবধান বাড়ে যায় ৩ হাজার৷ এরপর ২০১০ সালে চেতলা বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনে জয় পান ফিরহাদ হাকিম৷ ৬ জানুয়ারির উপনির্বাচনে তাঁর জয় যেন ছিল সময়ের অপেক্ষা।