Site icon The News Nest

চলে গেলেন জনপ্রিয় কবি পিনাকী ঠাকুর

pinaki thakur

কয়েক দিন অসুস্থ থাকার পরে মারা গেলেন কবি পিনাকী ঠাকুর। বয়স বয়েছিল ৫৯ বছর।তাঁর অকালপ্রয়াণ বাংলা কবিতার জগতে নিঃসন্দেহে এক অপূরণীয় শূন্যতা নিয়ে এল।
দিন পনেরো ধরে ভুগছিলেন ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ায়।গত ২২ ডিসেম্বর প্রথমে ভর্তি করা হয় কল্যাণীর জহরলাল নেহেরু হাসপাতালে। সেখানেই চিকিত্সা চলছিল। পরে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল বারাকপুরের একটি নার্সিংহোমে। রাখা হয়েছিল ভেন্টিলেশনে। অবস্থার অবনতি দেখে চিকিত্সকরা কবিকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। ২৮ ডিসেম্বর বারাকপুরের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। সেখানেই বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে রবীন্দ্রসদনে নিয়ে যাওয়া হবে কবির দেহ। শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশে ঘণ্টাখানেক সেখানেই রাখা থাকবে পিনাকী ঠাকুরের দেহ। তারপর সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে বাংলা অ্যাকাডেমি-তে। সেখানে থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে হুগলির বাঁশবেড়িয়ায়, কবির জন্মভিটেতে। সেখানেই ত্রিবেণী ঘাট মহাশ্মাশানে সম্পন্ন হবে কবির শেষকৃত্য।
লেখালিখির শুরু ১৯৮০-র দশকে। তবে পিনাকী খ্যাতি লাভ করেন ১৯৯০-র দশকেই। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একদিন অশরীরী’ প্রকাশমাত্রই পাঠকের নজর কাড়ে। এর পরে ‘আমরা রইলাম’, ‘অঙ্কে যত শূন্য পেলে’ ইত্যাদি বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র পিনাকী ২০১২ সালে ‘চুম্বনের ক্ষত’ কাব্যগ্রন্থের জন্য পেয়েছিলেন আনন্দ পুরস্কার। তার আগেই পেয়েছিলেন কৃত্তিবাস পুরস্কার, বাংলা আকাদেমি পুরস্কার। পিনাকীর কবিতায় এক বিষাদময় অথচ রোম্যান্টিক মফস্‌সলের জীবন বার বার উঠে এসেছে। তাঁর লিখনে স্পষ্ট ধরা পড়ছে মিলেনিয়াল প্রজন্মের বাঙালির দোলাচল। বাংলার আবহমানকে সাম্প্রতিকের সঙ্গে পরিবেশন করত তাঁর কবিতা। কেন্দ্রীয় সরকারে বৃত্তি পেয়েছিলেন চৈতন্যদেব সংক্রান্ত গবেষণার জন্য।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যে কবি পিনাকী ঠাকুরের অবদান অনস্বীকার্য। ‘অকালবসন্ত’, ‘কলঙ্করচনা’, ‘শরীর কাচের টুকরো’-র মতো একাধিক কাব্যগ্রন্থের সৃষ্টি হয়েছে তাঁর হাতেই।বছরের শুরুতেই এই কবির অকাল প্রয়াণে আরও গভীর শূন্যতা তৈরি হল সংস্কৃতি মহলে।

Exit mobile version