#নয়াদিল্লি: বিজেপি–র আগমার্কা হিন্দুত্ববাদ আর কট্টর জাতীয়তাবাদ। এই দুইয়ের নিখুঁত মিশেলে মোক্ষম অ্যাজেন্ডা তৈরি। যা একেবারে তৃণমূল স্তরের ক্যাডারদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আর তাতেই ‘মোদি ঝড়’–এর আরও জোরালো গতিবেগ দেখল বিজেপি। সৌজন্যে, দলের ‘চাণক্য’ অমিত শাহ।
পাঁচ বছর আগে উত্তরপ্রদেশে বাজিমাত করে খোদ নরেন্দ্র মোদীর থেকে ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’-এর শিরোপা পেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর থেকে প্রশস্তি জুটল, ‘‘অমিতভাই যশস্বী, পরিশ্রমী সভাপতি।’’ সন্ধ্যায় বৃষ্টিভেজা দিল্লিতে তাঁকেই সঙ্গে নিয়ে ‘বিজয়-উৎসব’-এ মাতলেন মোদী। লালকৃষ্ণ আডবাণীকে সরিয়ে গুজরাতের গান্ধীনগর থেকে প্রথম বার লোকসভা নির্বাচন করে সাড়ে পাঁচ লক্ষের বেশি ব্যবধানে জিতেছেন। আডবাণীর গত বারের রেকর্ড ছাপিয়ে। বৃহস্পতিবার সে কেন্দ্রের ভোটারদেরও ধন্যবাদ জানান। খোদ আডবাণীও তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এমন নয়, এই অমিত শাহের সাংগঠনিক কৌশলে গত পাঁচ বছরে বিজেপি হারেনি। উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচন থেকে হাল আমলে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ে হেরেছে বিজেপি। তবু বিপুল জনমতের পরে ফের দিল্লির অলিন্দে পুরনো একটি তকমাই ফিরে এল, ‘চাণক্য’।
আর সেজন্যে এবার তাঁকে বড় কিছু দিয়ে পুরস্কৃত করতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। এমনটাই দিল্লির অন্দরে খবর। কিন্তু কি সেই পুরস্কার? শোনা যাচ্ছে, এবার সম্ভবত অমিত শাহকে নিজের মন্ত্রিসভায় আনতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। উল্লেখ্য, বুথ পরবর্তী সমীক্ষার পরেই গত মঙ্গলবার এনডিএ’র সমস্ত শরিককে নিয়ে বৈঠকে বসেন মোদী-অমিত শাহরা। যদিও সেই বৈঠকের আগে কার্যত খুবই ‘গোপনে’ নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন মোদী-অমিত শাহরা। যেখানে মোদীর সমস্ত মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিল।
এখন ফলাফল সামনে এসে গিয়েছে। এবার নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পালা। আর সেখানেই অমিত শাহকে জায়গা দিয়ে বিপুল ভোটে জয়ের জন্যে পুরস্কৃত করতে পারেন মোদী। শোনা যাচ্ছে, এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মতো গুরু দায়িত্ব অমিত শাহের উপরেই চাপানো হবে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন রাজনাথ সিং। তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে দিল্লির অন্দরে গুঞ্জন। অন্যদিকে, দুই সিনিয়র ও অসুস্থ নেতা অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজ এবার মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন কিনা সেটাও যথেষ্ট বড় সংশয়। কারণ এই দুজনেই কিডনিঘটিত রোগে আক্রান্ত। শুধু তাই নয়, এবারের লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীতাও করেননি। ফলে আগামী পাঁচ বছর অর্থমন্ত্রক ও বিদেশমন্ত্রকের পদ সামলানোর মতো গুরুদায়িত্বে তাঁরা আবার গ্রহণ করবেন কিনা সেটা নিয়ে জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিকমহলে।