রাষ্ট্রপুঞ্জ: ফের একবার মাসুদ আজাহারকে ‘বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী’ ঘোষণায় বাধা হয়ে দাঁড়াল চিন। মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করা হোক। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর ফ্রান্স রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে এই প্রস্তাব এনেছিল। এরপর আমেরিকা, ব্রিটেন এবং পরবর্তীতে রাশিয়া তাতে সম্মতিও জানিয়েছিল। কিন্তু ভারতের ভয় ছিল চীনকে নিয়েই। কারণ এর আগে তিনবার নয়াদিল্লির এই প্রয়াস ভেটো প্রয়োগ করে আটকে দিয়েছিল বেজিং। আর সেই আশঙ্কাই এবারও সত্যি হল। রাষ্ট্রপুঞ্জ সূত্রে খবর, প্রক্রিয়াগত কারণ দেখিয়েই চতুর্থবার এই ঘোষণাকে আটকে দিয়েছে চীন। গোটা ঘটনায় ভারত ‘হতাশ’ বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরে তার দায়িত্ব স্বীকার করে জইশ ই মহম্মদ। তার কিছুদিন পরে জইশ প্রধানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব আনে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও আমেরিকা। পরে জার্মানিও সেই প্রস্তাবে সমর্থন করে। প্রস্তাবটি কার্যকর হলে মাসুদের সব সম্পদ ফ্রিজ করা হত। তাঁর ঘোরাফেরার ওপরে বিধিনিষেধ আরোপ করা হত। কেউ যাতে তাঁকে অস্ত্র না বেচতে পারে সেদিকেও নজর রাখা হত।নিয়ম অনুযায়ী প্রস্তাব আনার দশ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কোনও দেশ এই বিষয়ে আপত্তি না জানালে প্রস্তাবটি পাশ হয়ে যেত। সেই অনুযায়ী বুধবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে বারোটার আগেই এই নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে হত চীনকে। কিন্তু সেই সময়সীমার শেষ মুহূর্তে এসে প্রক্রিয়াগত কারণ দেখিয়ে এই ঘোষণা আটকে দেয় চীন। বেজিংয়ের দাবি, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাঁদের আরও সময় লাগবে। যদিও এমনটা ঘটার আশঙ্কা করা হয়েছিল আগেই। প্রস্তাব পেশ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এই বিষয়টির মীমাংসা ‘প্রত্যেকের কাছে গ্রহণযোগ্য’ হওয়া প্রয়োজন। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং বলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের মতো আচরণ করবে চিন।’’
এই ঘটনার পর এক বিবৃতিতে সমর্থনকারী দেশগুলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘‘আমরা হতাশ। এর ফলে জম্মু-কাশ্মীরের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষিতে মাসুদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে পদক্ষেপ করার পথ বন্ধ হয়ে গেল।’’