Site icon The News Nest

চোখের জলে মিশে গেল হায়দরাবাদ- মুম্বই, সন্তানের জন্য হাহাকার দুই বাবার

siraj

ছেলের শেষকৃত্যে সিরাজ খান

নয়াদিল্লি : শোকের রূপ বিশ্ব জুড়ে একই থাকে।সন্তানের জন্য বাবার আকুতির মত কষ্ট কিছুতেই নেই। দুটি পৃথক ঘটনায় সন্তানের জন্য হাহাকার এখন মুম্বই ও হায়দরাবাদ-এর দুই পরিবারে। একটি জানে না তাঁদের সন্তান ঠিক কোথায় আছেন আর অন্য জন জানেন সন্তান চলে গিয়েছে জীবনের ওপারে ।

সাপ্তাহিক নামাজ পড়তে শুক্রবার নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে র আল নূর মসজিদে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদের বাসিন্দা ফারহাজ এহসান। তারপর থেকেই আর খোঁজ নেই তাঁর। যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বাড়ির লোকজন। বন্দুকবাজের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত ৪৯ জনের তালিকায় নাম নেই তো – আপাতত এই চিন্তাই কুরে কুরে খাচ্ছে বৃদ্ধ মহম্মদ সায়েদউদ্দিনকে। সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাঁর কাতর আর্জি,“দয়া করে ওঁকে খুঁজে বের করুন।”

মহম্মদ সায়েদউদ্দিন

তিনি জানিয়েছেন, “শুক্রবার প্রার্থনা জানাতে মসজিদে যায় আমার ছেলে। এখনও পর্যন্ত তার কোনও খবর নেই। শুনতে  পাচ্ছি ১৭ জন নিখোঁজ। সরকারের কাছে আবেদন করছি আমার সন্তানকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক।”ওই হামলায় আক্রান্ত আরও এক হায়দরাবাদির দাদা খুরশিদ জাহাঙ্গির বলেন, “ভাইয়ের সম্পর্কে সঠিক খবর জানতে পারছি না। সরকার দ্রুত ভিসার ব্যবস্থা করলে নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে ভাইয়ের সন্ধান নিতে পারি।” তাঁর ভাই আহমেদ জাহাঙ্গির হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

অন্যদিকে,বৃহস্পতিবার ছত্রপতি শিবাজি স্টেশনের হিমালয় ফুটব্রিজ দিয়ে হাঁটছিলেন বাবা-ছেলে।ফুটব্রিজ ভেঙে পড়ছে দেখে বছর ৬০-এর সিরাজ খান কে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর ছেলে জাহিদ খান। সিরাজের বুকে এবং পিঠে চোট লেগেছে। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি জাহিদের।ঘাটকোপার ওয়েস্টে সিরাজ খানদের পাড়ায় এখন শোকের ছায়া। এক প্রতিবেশীর কথায়, “জাহিদ ধাক্কা না দিলে মারা যেতেন সিরাজও। সিরাজ যেখানে পড়েছিলেন, তার থেকে একটু দূরে একটা পাথরের চাঁই পড়ে।”শুক্রবার জাহিদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন পরিবারের সদস্যরা। শেষ যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন পাড়ার প্রায় শ-তিনেক লোক। কিন্তু কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারছেন না সিরাজ। খালি একটা কথাই বলে চলেছেন তিনি, “আমাদের ঘরের আলো নিভে গেল।”

ছেলের শেষকৃত্যের পরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সিরাজ। বুকে, পিঠে চোটগুলো বেশ গুরুতর। কিন্তু আশঙ্কাজনক কিছু নয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যেই তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।কিন্তু তাঁর বাড়ি যে আর আগের মতো থাকবে না, সেটা ভালোই বুঝতে পারছেন সিরাজ খান।

 

 

Exit mobile version