নয়াদিল্লি : রাফাল নথির চুরির বিতর্কে নয়া ‘তড়কা’ যোগ করলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম । তাঁর প্রশ্ন, চুরি যদি না হয়ে থাকে, গোপন নথির ফোটোকপি পাওয়া গেল কীভাবে?
রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা সংক্রান্ত নথি কি চুরি হয়েছে? নাকি আবেদনকারীরা ওই নথির ফোটোকপি ব্যবহার করেছেন? অ্যাটর্নি জেনারেলের দু’রকম মন্তব্যে ছড়িয়েছে বিভ্রান্তি। এই অবস্থায় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম সরকারকে কটাক্ষ করে বললেন, ‘চোর’ নিশ্চয় চুরি করা নথিপত্র ফেরত দিয়ে গিয়েছে। রাফাল রায় বদলানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে ৬টি আবেদন জমা পড়েছে। ওপেন কোর্টে সেই আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে গত বুধবার। ওই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল সুপ্রিম কোর্টে বলেছিলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে রাফাল বিমান সংক্রান্ত চুক্তির নথিপত্র চুরি হয়ে গিয়েছে। ওই মন্তব্যের পরে দেশ জুড়ে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বিরোধীরা একবাক্যে বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রকের গোপন নথি যদি চুরি হয়ে থাকে, তার দায় নিতে হবে সরকারকেই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যারা ফাইল সামলাতে পারে না তারা দেশকে নিরাপদে রাখবে কী করে?’
চাপান উতোর শুরু হতেই একদিনের মধ্যেই নিজের বয়ান বদল করেন বেণুগোপাল। শুক্রবার তিনি বলেন, রাফাল নথি চুরি যায়নি।আগের দিন তিনি বলতে চেয়েছিলেন,যাঁরা রাফায়েল চুক্তি নিয়ে তদন্ত চান, তাঁরা ওই নথির ফোটকপি ব্যবহার করেছেন। যেভাবেই হোক তাঁরা ওই গোপন নথির নাগাল পেয়েছেন।
On Wednesday, the Official Secrets Act was shown to the newspaper.
On Friday, the Olive Branches Act was shown.
We salute common sense.
— P. Chidambaram (@PChidambaram_IN) March 9, 2019
এই প্রেক্ষিতে শনিবার বিদ্রুপের সুরে টুইট করে চিদম্বরম বলেন,’প্রথমে শুনলাম, নথি চুরি হয়েছে। পরে শুনছি নথির ফোটোকপি হয়েছে। চোর নিশ্চয় নথি চুরি করে ফোটোকপি করেছিল। তারপর নথি ফেরত দিয়ে গিয়েছে।’ পরে আরও একটি টুইটে তিনি লেখেন,’বুধবার শুনেছিলাম, নথি চুরি গিয়েছে। শুক্রবার শুনলাম নথির ফোটোকপি পাওয়া গিয়েছে। মাঝে বৃহস্পতিবার নিশ্চয় চোর নথি ফেরত দিয়ে গিয়েছিল!’
শুক্রবার বেনুগোপাল জানান, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। আসলে তিনি বলতে চেয়েছেন, রাফাল এর গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মন্ত্রক থেকে বের করে তা ফটোকপি করা হয়েছে। বিরোধীরা তার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি একবারও চুরি যাওয়ার কথা বলেননি। বেনুগোপালের দাবি, তিনি বলতে চেয়ে ছিলেন মামলাকারীরা আসল নথির প্রতিলিপি প্রকাশ করে। যার অর্থ আসল নথিটি ফটোকপি করা হয়। অর্থাৎ এর মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপনীয়তা নষ্ট হয়েছে। এই নথিটিকে গোপনীয়তার তকমা দিয়েছে কেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল বিরোধীরা নাকি বলছে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত নথি চুরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ কথা আমি বলিনি। আমার মন্তব্যে ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে।’ তবে তিনি যে ‘চুরি যাওয়া’ কথাটি বুধবার সুপ্রিম কোর্টে ব্যবহার করেছিলেন সে কথা বলছেন অনেকেই। এমনকি সরকারি আধিকারিকরাও একথা অনেকেই স্বীকার করেছেন।