শ্রীনগর: পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জইশ হামলার পর উপত্যকার আনাচ কানাচে শুরু হয়েছিল জঙ্গি নিধন অভিযান। তল্লাশি অভিযানে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ধরপাকড়ও চলে যথেচ্ছ ভাবে। জঙ্গি কার্যকলাপে সক্রিয় যোগ রয়েছে, সন্ত্রাসবাদে মদত দেন, এই অভিযোগে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছিল কাশ্মীরের এক স্কুল শিক্ষককে। সোমবার রাতে পুলিশি হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে এক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর। আর এই খবর ছড়াতেই ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে উপত্যকা।
জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যোগ রয়েছে, নিয়মিত মদত দেন সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মে এমনটাই অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই মর্মেই শ্রীনগরে গ্রেফতার করা হয়েছিল রিজওয়ান পণ্ডিত নামে এক স্কুল শিক্ষককে।বছর আঠাশের রিজওয়ান জম্মু-কাশ্মীরের অবন্তীপোরার পুলওয়ামা জেলার বাসিন্দা। স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলে পড়াতেন তিনি। শান্তশিষ্ট, ভালো মানুষ বলেই এলাকায় তাঁর পরিচয় ছিল। রিজওয়ানের পরিবারের দাবি, কোনও ভাবেই জঙ্গি কার্যকলাপে তাঁর কোনও যোগ ছিল না। অভিযোগ, পুলিশ জোর করে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
রিজওয়ানের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিক্ষোভ শুরু হয়। শ্রীনগর ও অবন্তীপোরায় রাস্তায় নেমে শুরু হয় প্রতিবাদ। বন্ধ করে দেওয়া হয় দোকানপাট। নিরাপত্তারক্ষীদের দিকে পাথর ছোড়া শুরু হয়। শিক্ষকের মৃত্যুর পরই ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
Midnight raids, crackdowns, rampant arrests, custodial murders, denial of democratic right to choose a government. Kashmir continues to suffer the fallout of the disastrous PDP-BJP alliance and from the Modi government’s muscular approach to J&K.
— Omar Abdullah (@OmarAbdullah) March 19, 2019
যদিও পুলিশের তরফে এ নিয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। রিজওয়ানের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭৬ ধারায় তদন্ত শুরু হয়েছে। জম্মুর কার্গো ক্যাম্পে রিজওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রের খবরে। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তবে কোন অফিসাররা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, তা এখনও পর্যন্ত জানানো হয়নি।
Innocent men hauled up from their homes for interrogation return home only in coffins now. GoI’s repressive approach leaves young educated men vulnerable who are forced to take up arms. Stop using Kashmir to exhibit your sick chauvinistic nationalism. We have suffered enough. https://t.co/YF4RhVb1QQ
— Mehbooba Mufti (@MehboobaMufti) March 19, 2019
ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। নিরাপরাধ মানুষের উপর জুলুম বন্ধ করার জন্য প্রতিবাদ জানিয়ে টুইট করেছেন পিডিপি নেত্রী তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও। তিনি বলেছেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিরাপরাধ মানুষজনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আর ফেরত আসছে তাঁদের কফিনে বন্দি দেহ। এই সব ঘটনা শিক্ষিত মানুষজনকেও অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য করে। আমরা অনেক সহ্য করেছি, এ বার কাশ্মীরে মিথ্যা স্বদেশভক্তির প্রদর্শন বন্ধ হোক।’’রিজওয়ানের মৃত্যুকে ঘিরে প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাকামী নেতারাও। হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুখ টুইট করে বলেছেন, ‘‘পুলিশি হেফাজতে ফের নির্মম মৃত্যুই প্রমাণ করে কাশ্মীরিরা কতটা অসহায় এবং নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।’’