নয়াদিল্লি: বকেয়া বেতন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিটিয়ে দেওয়ার জন্য এ বার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে চিঠি লিখলেন জেট এয়ারওয়েজের পাইলটরা। প্রধানমন্ত্রী ও অসামরিক বিমানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এও লেখা রয়েছে, “বিমানসংস্থার পাইলট ও ইঞ্জিনিয়াররা প্রায় তিনমাস ধরে বেতন পাননি। বাকি সবাই বেতন পেয়েছেন। আমরা বারবার সংস্থাকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। এই অবস্থার ফলে পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পাইলটরা নিজেদের কর্তব্য করছেন। বিমান ওড়াচ্ছেন তাঁরা। ফলে এখনও বিমানসংস্থা চলছে। কিন্তু এ ভাবে আর কতদিন? পাইলটরা মানসিকভাবেও বিধ্বস্ত। এই অবস্থায় যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে কোনও সমস্যা হোক, সেটা কোনও ভাবেই আমরা চাই না।”
জেট এয়ারওয়েজ পাইলটের নথিভুক্ত ট্রেড ইউনিয়ন ন্যাশনাল অ্যাভিয়েটরস গিল্ড জেট বন্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে৷ জানায়, বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে জেট৷ এতে হাজার হাজার কর্মচারি কাজ হারাবেন৷ দেশের উড়ান পরিবহন ক্ষেত্রে বিরাট প্রভাব পড়বে৷ এয়ারলাইন্সের সংখ্যা কমে যাবে এবং অন্য উড়ান সংস্থায় যাত্রী চাপ বাড়বে৷ এতে টিকিটের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ ফলে যাত্রীরাও অসুবিধায় পড়বেন৷দিন দুই আগেই পাইলটরা হুমকি দিয়েছেন, বেতন না পেলে ১ এপ্রিল থেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে কাজ।ডিজিসিএ-কে চিঠিতে জেট এয়ারওয়েজ-এর কর্মীরা জানিয়েছেন, ‘সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট ব্যবসার দিকটা দেখে৷ কিন্তু, আমরা ইঞ্জিনিয়াররা যাত্রী সুরক্ষার দিকটি দেখি৷ বিমানগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করি৷ গত ৭ মাস ধরে আমরা ঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছি না৷ এখনও পর্যন্ত ৩ মাসের বেতন বকেয়া৷মাসের পর মাস মাইনে নেই৷ সংসার চালাতে নাভিঃশ্বাস উঠছে৷ কর্মীদের মানসিক অবস্থা ভালো নয়৷ এই অবস্থায় বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না৷ তাই যাত্রীদের সুরক্ষা ঝুঁকির মুখে৷ যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে৷’
নরেশ গোয়েলের এই সংস্থা গত ২৫ বছরে সবথেকে খারাপ আর্থিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার দেনায় চলছে এই সংস্থা। ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক, সাপ্লায়ারদের কাছে অনেক টাকা দেনা হয়ে গিয়েছে। এর ফলে ৪৫০ বিমান থেকে কমিয়ে বর্তমানে ১৫০ বিমান চালাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজ। প্রায় ৩০০ বিমানকে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
অসামরিক বিমানমন্ত্রকের তরফে ইতিমধ্যেই জেট এয়ারওয়াজকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে যাত্রীদের সুবিধার জন্য বিমানের সংখ্যা বাড়ানো হয়। না বাড়াতে পারলে যাত্রীদের টাকা ফেরতের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের অধীনে থাকা বিভিন্ন ব্যাঙ্কও চেষ্টা করছে, যাতে জেট এয়ারওয়াজের এই দেনা মেটাতে সাহায্য করা যায়। এ ছাড়াও জেট-এর অন্যতম পার্টনার আবু ধাবির এতিহাদ এয়ারলাইন্সের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে।