#কলকাতা: রবিবার ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। রাজ্যের সব থেকে উষ্ণতম অঞ্চলে এ বার ভোটের পালা। নির্বাচন কমিশনের কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের তাপপ্রবাহ। রবিবারও যে পরিস্থিতি থেকে স্বস্তির সম্ভাবনা নেই। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে গরমে অসুস্থ হয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে কারণে বিশেষ উদ্যোগ নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। সাধারণ ভোটারদের সুবিধার্থে ভোটকেন্দ্রে আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। থাকবে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থাও। দেওয়া হবে জলের পাউচ।
পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে আজ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে। একই পরিস্থিতি বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরেও। তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুঁই। ঘাটাল, মেদিনীপুর, কাঁথি, তমলুকেও মাথার উপর আগুন ঝরাচ্ছে সূর্য। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রয়েছে আর্দ্রতা। ফলে প্রচণ্ড গরমের সঙ্গেই প্যাঁচপেচে ঘামে অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় হাঁসফাঁস করছে মানুষ। বেলা একটু বাড়তেই শুরু হয়ে যাচ্ছে লু। প্রবল গরম হাওয়া ঝলসে দিচ্ছে চোখ-মুখ। বেলা ১২টা বাজতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে যাঁদেরকে রাস্তায় বেরতে হচ্ছে, তাঁরা সাদা ওড়না বা কাপড়ে মুখ ঢেকে বেরচ্ছেন।
এখন আগামিকাল যে ৬ কেন্দ্রে ভোট, তার প্রত্যেকটিতেই তাপপ্রবাহ চলবে বলে সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এই পরিস্থিতিতে নাজেহাল অবস্থা ভোটকর্মীদের। এই গনগনে রোদের মধ্যে ভোট কী করে হবে? প্রশ্ন তুলেছেন ভোটকর্মীরা। আজ ডিআরডিসি কেন্দ্রগুলি থেকে ইভিএম ও ভিভিপ্যাট বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রবল দাবদাহের মধ্যেই ইভিএম নিয়ে বুথের দিকে রওনা হচ্ছেন ভোটকর্মীরা। অনেককেই দেখা যাচ্ছে, ইভিএম ঢাকার কভার দিয়ে রোদের হাত থেকে নিজের মাথা আড়াল করতে। কেউ রোদের হাত থেকে বাঁচতে গাছের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন। মাথার উপরে ছাউনি থাকলেও, এই প্রবল তাপের হাত থেকে বাঁচতে তা যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ ভোটকর্মীদের। গরমের হাত থেকে বাঁচতে শীতে ভোটের দাবি তুলেছেন তাঁরা। অন্যদিকে, অতিরিক্ত গরমে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাঁকুড়ায় ৩ শতাংশ ইভিএম ও ভিভিপ্যাট বেশি বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। কারণ গরমের ফলে এর আগে ইভিএম খারাপ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাই রাঢ়বঙ্গের গরমে ভোট পরিস্থিতি সামাল দিতেই কমিশন অতিরিক্ত ইভিএম বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য, মে মাসের প্রচণ্ড গরমে এভাবে রাঢ়বঙ্গে ভোট করায় তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কমিশনের বিচক্ষণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, যে সব বুথে স্থায়ী ছাউনি নেই, সেখানে অস্থায়ী ছাউনির ব্যবস্থা করা হবে। পানীয় জলের ক্ষেত্রে যেখানে টিউবওয়েল সম্ভব, সেখানে তাই বসানো হচ্ছে। পাশাপাশি ভোটকর্মীদের জন্যও নিয়মমতো সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জল, বিদ্যুতের সংযোগ, মেডিক্যাল কিট থাকছে। সব ভোটগ্রহণকেন্দ্র ভালো করে জরিপ করা রয়েছে। সেই মতো কেউ অসুস্থ হলে কোন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে বা কোথায় অ্যাম্বুল্যান্স তার বিশদ সেক্টর অফিসারদের কাছে রাখা থাকছে।