কলকাতা: তৃণমূলে আরও কোণঠাসা অবস্থায় সব্যসাচী দত্ত? বিধাননগরের ৩১নং ওয়ার্ডে নিজের এলাকাতেই সব্যসাচীকে ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হল না। সব্যসাচীর পরিবর্তে ওই এলাকায় ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুপ্রিয় মজুমদারকে। শনিবার দলের নির্বাচনী কমিটির বৈঠকের পর রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, “তিনি (সব্যসাচী) একজন কাউন্সিলার, মেয়র এবং বিধায়ক। তিনি ব্যস্ত মানুষ। ফলে তাঁকে আর ব্যস্ত করতে চাইছে না দল”।
জানা গিয়েছে, আগামী রবিবার সল্টলেকের বিএফ ব্লকে ‘হোলি মিলন’ নামে একটি অনুষ্ঠান রয়েছে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে ফিরহাদ-সহ অন্যান্যদের নাম ছাপা হলেও নেই বিধাননগরের মেয়রের নাম। এমনকী, তাঁকে এখনও আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। ‘হোলি মিলন’ প্রসঙ্গে সব্যসাচী বলেন, “আমাকে কেই কিছু বলেননি। কোথায়, কী অনুষ্ঠান রয়েছে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না”। একই সঙ্গে নিজের ওয়ার্ডে অন্য তৃণমূল নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দলের অনেক ভালো কর্মী রয়েছেন। দল যাঁকে যোগ্য মনে করবে, তাঁকেই দায়িত্ব দেবে”।
বেশ কয়েক দিন ধরেই ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের জেরে দলের নজরে পড়েছিলেন বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত।কয়েক সপ্তাহ আগেই সব্যসাচীবাবুর সল্টলেকের বাসভবনে যান বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সেখানে প্রায় দু-ঘণ্টা ছিলেন তিনি। আলোচনা সেরে বেরিয়ে এসে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি জানান, ব্যক্তিগত সম্পর্কের খাতিরেই তিনি সব্যসাচীর ভালো-মন্দের খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি লুচি-আলুরদম খেয়েছেন বলে জানানোর পাশাপাশি জানান, তাঁদের আলোচনার প্রসঙ্গ ছিল ক্রিকেট ম্যাচ। যদিও রাজনৈতিক মহলের ধারণা, দুই তুখোড় রাজনীতিকের দীর্ঘ সময়ের আলোচনায় যে রাজনৈতিক প্রসঙ্গ উঠে আসেনি, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।এর পরই সব্যসাচীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্কের।দোলের দিন বিধাননগরের সিএফ পার্কে মূলত অবাঙালিদের সংগঠন সংস্কৃতি সংসদ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত সব্যসাচী বক্তব্য পেশ করতে উঠেই বলেন, “সঞ্চালক আমাকে চিফ গেস্ট বলছিলেন, বিধাননগরের মেয়র বলছিলেন, কিন্তু আমি আপনাদের ‘ঘর কা ছোরো’ হয়েই থাকতে চাই। তাতেই আমি খুশি, কারণ মেয়র হিসেবে আমি জন্মাইনি, ‘মারো ঘর কা ছোরো হ্যায়’ হয়ে থাকতে চাই শুধু।” এখানেই না থেমে সব্যসাচী বিতর্ক আরও এক প্রস্থ উসকে দিয়ে বক্তব্যের শেষে ‘ভারতমাতা কি জয়’ স্লোগান তোলেন। সঙ্গে সঙ্গেই শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে, গেরুয়া শিবিরের পথে কি আরও এক পা বাড়ালেন সব্যসাচী।