নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: আজও প্রার্থী ঘোষণা করতে পারল না বিজেপি। অথচ দিলীপ ঘোষরা স্বপ্ন দেখছেন বাংলায় ২৩ টি আসন পাবেন তাঁরা।কিন্তু এই আসন পেতে গেলে যে প্রথমেই প্রার্থী দিতে হবে সে দিকে হুঁশ নেই কারোরই।সাধারণ মানুষ আজকাল বলছেন, ওরা হয়তো দলছুট তৃণমূলের অপেক্ষায় রয়েছে। তাই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারছে না। কবে কে কখন তৃণমূল ছেড়ে দলে আসে আপাতত সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন দিলীপ ঘোষরা।
ভাল করে দেখলে বোঝা যাবে, তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতাদের বঙ্গ বিজেপিতে মহাকদর।এখন বাংলায় বিজেপি মানে বাম স্লোগান আর দলছুট তৃণমূল নেতাদের দাপাদাপি। ঘাসফুল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যারা যোগ দিয়েছেন তারা সবাই দিলীপ ঘোষের থেকে বড় নেতা হয়ে গিয়েছেন।সেই অর্থে এই মুহূর্তে সবথেকে ক্রাইসিসে রয়েছেন দিলীপ নিজেই। মুকুল রায়ের মত নেতা যদি হঠাৎ তাঁদের মাথায় চড়ে বসেন সেটা সহ্য করা যে কোন মানুষের পক্ষেই কঠিন ব্যাপার। ন্যূনতম আবেগ থাকলে এটি হজম করা প্রায় দুঃসাধ্য। এক্ষেত্রে দিলীপ ঘোষ অসীম শক্তির পরিচয় দিচ্ছেন। এপর্যন্ত মুকুল ছিলেন, এবার যোগ দিলেন অর্জুন। প্রশ্ন হল বিজেপি কি তাহলে এতদিনেও এখানে কোন নেতা তৈরি করতে পারেনি।
বৃদ্ধ আরএসএস মার্কা বিজেপি নেতারা বঙ্গ বিজেপি-র এমন দশা দেখে বেজায় চটেছেন। যারা মনেপ্রাণে বিজেপি, তাদের জায়গা হচ্ছে না দলে। তৃণমূল থেকে কে কবে ছেড়ে আসবে সেই অপেক্ষায় আঁচল পেতে বসে রয়েছেন বঙ্গ বিজেপি মাথারা। যারা মুকুল রায় কে মাথায় বসান তাদের প্রথম এই বোঝা উচিত ছিল, এবার এখানে দলছুট তৃণমূলের ভিড় হবে। এতদিন যারা বিজেপির জন্য মাঠে ময়দানে ঘুরেছেন তাদের দিন শেষ। এটি কেবল বিজেপি নয় সব রাজনৈতিক দল এমন প্রবণতা থাকে তবে তা শুরু হয় রাজনৈতিক দলটির ভাঙ্গনের কালে, গঠনের কালে নয়। বিজেপি যদি শুরুতেই এমন কাঙ্গাল দশা প্রকাশ করে তাহলে বাংলার মানুষ তাদের ভালোভাবে নেবে কি না তা নিয়ে ঘোর সংশয় দেখা দিচ্ছে। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন যদি বিজেপিতে নেতা হতে চাও তাহলে আগে তৃণমূল করো তবে মর্যাদা পাবে।
জনমত সমীক্ষাগুলি অবশ্য বলছে বিজেপির আসন বাড়বে। একই সঙ্গে বাম ও কংগ্রেসকে তারা একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। বহু সমীক্ষাতে উঠে এসেছে বাম এবং কংগ্রেস নাকি এবার একটিও আসন দখলে রাখতে পারবে না। বিজেপির আসার কথা সেখানেই। বামফ্রন্টের ভোট এর আগেই বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে। কংগ্রেসের অবস্থা বলার মত নয় বহুদিন ধরেই। সুতরাং তাদের ভোটার যে বিজেপিকে অক্সিজেন যোগাবে তাতে সন্দেহ নেই। এখন প্রশ্ন হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কতগুলি আসন ধরে রাখতে পারবেন। টাইমস নাউয়ের জনমত সমীক্ষা আগেই বলেছে ৩১ টি আসন থাকতে পারে তৃণমূলের দখলে। কিন্তু বিজেপি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে যেভাবে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করে ফেলছে তাতে ভোটাদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই। তারা প্রার্থী দিতে যত দেরি করবে ততোই সুবিধা হবে শাসকদলের। যদি মনে করে শাসকদলের দলছুট নেতা কবে আসবেন সেই অপেক্ষাতে প্রহর গোনা যাক তাহলে এ নির্বাচনে লড়াই আর লাভ নেই। তৃণমূল সুপ্রিমোর নাম মমতা। তিনি জানেন কিভাবে ঘর গুছাতে হয়। তাঁকে একটু সময় দিলেই সবকিছু অতি সহজেই নিজের নিয়ন্ত্রণে আনা স্বাভাবিক দক্ষতা কাজে রয়েছে তা বিলক্ষণ বুঝেছে বঙ্গবাসী।
অন্যদিকে, কিছুদিন আগে সোশ্যাল সাইটে ঘোরা বামেদের মিছিলের স্লোগানটি সকলেই শুনেছেন। সেটি এবার বাবুলের বলা ভালো বঙ্গ বিজেপি থিম সং। বাম ছেলেপুলেদের বক্তব্য হল, কেবল প্রার্থী নয় স্লোগানও বিজেপি ধার করে অন্য দলের কাছ থেকে। বামফ্রন্টের স্লোগান খুব সুন্দর সুর করে গেয়েছেন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তাতে আবার গীতিকার সুরকারের নাম দেওয়া হয়েছে। অন্যদলের স্লোগান এবং অন্যদলের নেতা নিয়ে কি করে বৈতরণী পেরোয় বিজেপি -আপাতত তা দেখতে উৎসুক আমজনতা।