#কলকাতা: বেশ কয়েক দিন ধরেই রাজনীতির বাজারে উত্তপ্ত খবর, বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্র। লোকসভা ভোটে দলীয় প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের পরাজয়ের পরই দলের জেলা সভাপতিপদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি একা নন। তাঁর সঙ্গে রাজধানীতে রয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ১৪ জন নির্বাচিত সদস্য। সূত্রের আরও খবর, দু’এক দিনের মধ্যেই দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের বিজেপি সদর দফতরে গিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক।
১৮ আসনের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ বিরোধী শূন্য। এখন ১৪ জন যদি গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন, তাহলে জেলা পরিষদ দখল করবে বিজেপি। আর তা সত্যি হলে, এটাই হবে বাংলায় বিজেপি-র প্রথম জেলা পরিষদ দখল। বিজেপি নেতারা খোলাখুলি কিছু না বললেও ঘরোয়া আলোচনায় অনেকেই বলছেন, এরপর লাইন দিয়ে উত্তরবাংলার জেলা পরিষদে ভাঙন শুরু হবে।
তবে বিজেপি জেলা পরিষদের দখল নিতে পারলে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে তৃণমূল। লোকসভার একটাও আসন জিততে পারেনি। বিজেপি-র কৌশল স্পষ্ট। বিধানসভা ভোটের আগেই উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ পুরসভা-পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করে নিরঙ্কুশ হয়ে উঠতে চাইছে গেরুয়া শিবির। পর্যবেক্ষকদের মতে, জেলা পরিষদের দখল নিয়ে নেওয়া মানে, সংশ্লিষ্ট গ্রামাঞ্চলে সমস্ত প্ৰকল্প এ বার রূপায়িত হবে বিজেপি-র হাত ধরে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের সময় থেকেই খবরের শিরোনামে রয়েছেন বিপ্লববাবু। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগেই বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে শোনা গিয়েছিল তাঁর নাম। নির্বাচিত সাংসদ অর্পিতা নিজের এলাকায় সময় দেন না, এই অভিযোগ তুলে তাঁকে প্রার্থী করতে আসরে নেমেছিল একাংশ। কিন্তু ফের প্রার্থী করা হয় অর্পিতাকেই। লোকসভা ভোটে বালুরঘাট আসনে বিজেপির কাছে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ। এই পরাজয়ের পিছনে তৎকালীন তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের হাত ছিল বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। ফলাফল খারাপ হতেই অর্পিতার পরাজয়ের দায়ভার বর্তায় বিপ্লব মিত্রর উপর। জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। পরাজিত প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ জেলায় দলের জেলা সভাপতি করেন। যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ উত্তম ঘোষকে। সেখানকার দায়িত্বে আনা হয় অর্পিতা অনুগামী অম্বরীশ সরকারকে।