নয়াদিল্লি: এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নতুন হাতিয়ার ব্লগ। গত কয়েকদিন ধরে তিনি ব্লগ লিখেছেন। বুধবার আবারও ব্লগ লিখলেন তিনি। এবারও ব্লগে তাঁর নিশানায় কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্র।
১১৬৫ শব্দের ওই ব্লগে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের স্মৃতিকথা লিখেছেন মোদী। জানিয়েছেন, ওই বছর দেশের মানুষ কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রকে হারিয়ে বিকাশের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন।তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেস বিশ্বাস করে পরিবারতন্ত্রে। বিজেপি বিশ্বাস করে সততায়। মানুষ পরিবারতন্ত্রের বদলে সততাকেই বেছে নিয়েছে।২০১৪ সালের মানুষের এই সিদ্ধান্তকে মোদী নিজের ব্লগে লিখেছেন, ‘অনেস্টি ওভার ডায়নেস্টি’।
মোদী লিখেছেন, দুঃখের বিষয়, কংগ্রেস দলে গণতন্ত্র নেই। কোনও নেতা যদি দলের শীর্ষ পদটি পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন, তাঁকে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। রাহুল এবং সনিয়ার পাশাপাশি ইন্দিরাকেও ছেড়ে কথা বলেননি মোদী। তাঁর কথায়, ‘ইন্দিরা গান্ধী বিচারব্যবস্থাকেও ছেড়ে কথা বলেননি। সংবিধান নয়, পারিবারিক আনুগত্যই ছিল তাঁর বেশি পছন্দ।’
নাম না করে ভুতপূর্ব ইউপিএ সরকারেও সমালোচনা করেন মোদী। তিনি লিখেছেন, যারা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সমান্তরাল একটি সংস্থা গড়ে তুলেছিল, তারা এখন প্রতিষ্ঠানগুলি রক্ষার কথা বলছে। এখানে মোদী বলেছেন এনএসি বা ন্যাশনাল অ্যাডভাইসারি কাউন্সিল নামে একটি সংস্থার কথা। প্রধানমন্ত্রীকে নানা বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ওই সংস্থাটি তৈরি করে ইউপিএ। প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী তার চেয়ারপার্সন ছিলেন।এরপর রাহুলের সমালোচনা করে মোদী লিখেছেন, কয়েক বছর আগে মন্ত্রিসভা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু এক ব্যক্তি সাংবাদিক বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তের কপি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তিনি মন্ত্রিসভার সদস্যও ছিলেন না। ২০১৩ সালে অভিযুক্ত সাংসদদের রক্ষা করার জন্য একটি অধ্যাদেশ আনা হয়েছিল। রাহুল গান্ধী প্রেস কনফারেন্সে তার কপি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন।
একই সঙ্গে তিনি কংগ্রেস নেতৃ্ত্বাধীন ইউপিএ সরকারের সঙ্গে এনডিএ সরকারের তুলনাও টেনেছেন প্রধানমন্ত্রী। লিখেছেন, ”নিকাশি ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে দেশের। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে অনেকে যুক্ত হয়েছেন। অনেকে আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন। ভবিষ্যতের জন্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে। গৃহহীনরা ঘর পেয়েছেন। গরিবদের স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যুবদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
পরিবারতন্ত্রের পাশাপাশি মোদী তোপ দেখেছেন কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালীন বিভিন্ন প্রতিরক্ষা দুর্নীতি নিয়েও। তাঁর কথায়, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে কংগ্রেস চিরকালই আয়ের উৎস হিসেবে দেখে এসেছে। সেই কারণেই দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে কখনও সম্মান দেয় না কংগ্রেস। ১৯৪৭ সাল থেকে দেশের প্রতিটি ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার একাধিক প্রতিরক্ষা দুর্নীতি করেছে। জিপ থেকে শুরু করে সেই দুর্নীতি বন্দুক, সাবমেরিন এবং হেলিকপ্টারেও।’ একই সঙ্গে গান্ধী পরিবারের নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, ‘প্রতিটি দুর্নীতির ক্ষেত্রেই মিডলম্যান বা দালালেরা একটি বিশেষ পরিবারের সঙ্গে যুক্ত দেখা গিয়েছে।’
এদিন মোদীকে জবাব দিতে পাল্টা ব্লগ লেখেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বডরা।তিনি বলেন,’গত ৫ বছর ধরে দেশের প্রতিটি সংস্থায় হস্তক্ষেপ করেছে বিজেপি।ছাড় দেওয়া হয়নি সংবাদ মাধ্যমকেউও। দেশের মানুষকে বোকা ভাবা এবার বন্ধ করুন প্রধানমন্ত্রীজি।মানুষ সব বুঝতে পারছে।’