নয়াদিল্লি: অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন ভারতীয় রাজনীতির ‘লৌহমানব’। সে জন্য নিজের ব্লগকেই বেছে নিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। সেখানে দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য এবং গণতন্ত্র জারি রাখার উপদেশ দিলেন বিজেপির এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। একই সঙ্গে বললেন, কেউ রাজনৈতিক ভাবে দলের বিরোধিতা করলেই তাঁকে অ্যান্টিন্যাশনাল বলতে হবে, এই ঐতিহ্য বিজেপির নয়।
বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা হইচই শুরু করতেই আসরে নামেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।ঠান্ডা মাথায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পাল্টা জবাব দেন তিনি। টুইটারে লিখলেন, ‘দেশ অগ্রাধিকার, তারপর দল, পরিশেষে ব্যক্তি’ মন্ত্রের মাধ্যমে বিজেপির সত্যিকারের নির্যাস তুলে ধরেছেন আডবাণীজি। বিজেপি কর্মী হিসেবে গর্বিত। আর আডবাণীজির মতো মহান নেতা দলকে আরও শক্তিশালী করেছেন”। ব্লগে আডবাণী আবেদন করেছেন, দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে মজবুত করতে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা করা উচিত। গণতন্ত্রের উত্সব নির্বাচন। এটা রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের সত্ভাবে আত্মমন্থনের সুযোগ তৈরি করেছে। আডবাণীর পাশে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লেখেন, বর্ষীয়ান রাজনীতিক, প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা আডবাণী গণতান্ত্রিক সৌজন্য নিয়ে তাত্পর্যপূণ মতামত দিয়েছেন। বিরোধীরা সরব হলেই দেশদ্রোহী নন। ওনার বক্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছি। ওনাকে অভিনন্দন।
বস্তুত বিজেপি-র সাংগঠনিক কাঠামোর রাশ সাত বছর আগেই পুরোপুরি দ্বিতীয় প্রজন্মের হাতে চলে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরাই এখন দলের কর্তা-ধর্তা। এবং তাঁদের নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে গেরুয়া শিবিরে অদ্ভুত ট্রেন্ডটা গোটা বিশ্বেরই নজর কেড়েছে। তা হল, কারও সঙ্গে মতান্তর হলেই তাঁর উপর দেশবিরোধী বলে তকমা সেঁটে দেওয়া। বা সটান বলে দেওয়া পাকিস্তানে চলে যান! শুধু তা নয়, মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ নিয়েও গেরুয়া শিবির থেকে উপর্যুপরি আঘাত হানা হয়েছে। আডবাণীর এ দিনের মন্তব্যকে সেই প্রেক্ষাপটেই দেখছেন রাজনীতির চরিত্ররা।স্বাভাবিক ভাবেই যা অস্বস্তিতে ফেলেছে ক্ষমতাসীন নেতৃত্বকে।