Site icon The News Nest

নতুন শিক্ষা নীতির খসড়ায় হিন্দি বাধ্যতামূলক! তীব্র ক্ষোভ দক্ষিণ ভারতে, আঁচ পেয়েই আসরে কেন্দ্র

hindi 2

#নয়াদিল্লি: নতুন শিক্ষা নীতি চালু করে দেশ জুড়ে হিন্দি ভাষা চাপানোর অভিযোগে গোড়াতেই নিশানার মুখে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুক্রবারই মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। তার পরেই তাঁর হাতে নতুন শিক্ষা নীতির খসড়া জমা পড়েছে। তাতে স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এ নিয়েই প্রতিবাদে সরব দক্ষিণের রাজ্যগুলি।

কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষা নীতির প্রধান, ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে কস্তুরীরঙ্গন৷ তাঁরই নেতৃত্বে নির্মিত জাতীয় শিক্ষা নীতির খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে, দেশের সব স্কুলে তিনটি ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক৷ হিন্দিভাষী রাজ্যে হিন্দির সঙ্গে ইংরেজি ও যে কোনও একটি ভারতীয় আধুনিক ভাষা শিখতে হবে৷ অ-হিন্দিভাষী রাজ্যে হিন্দি এবং ইংরেজির সঙ্গে শিখতে পারা যাবে একটি আঞ্চলিক ভাষা৷

দেখে নিন, আর কী কী রয়েছে এই খসড়ায়।

• স্কুলের আগে তিন বছরের প্রাক্-স্কুল শিক্ষা
• ১০+২ শিক্ষা ব্যবস্থার বদলে ৫+৩+৩+৪ ব্যবস্থা (প্রথম পাঁচ বছরে তিন বছরের প্রাক্ স্কুল ও প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণি)
• নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি মাধ্যমিক স্তর, প্রতি বছর ভাগ করা হবে  দু’টি সেমেস্টারে
• উচ্চমাধ্যমিক স্তর বলে কিছু থাকবে না
• অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক
• পাঠ্যক্রমে সামাজিক দায়বদ্ধতা, একাধিক ভাষা শিক্ষা ও ডিজিটাল শিক্ষায় জোর
• তিন বছরের বদলে চার বছরের অনার্সের স্নাতক স্তর
• শিক্ষার অধিকার আইনে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নিখরচায় বাধ্যতামূলক শিক্ষা

এর পরেই দক্ষিণে এনডিএ-র শরিক এডিএমকে এবং পিএমকে জানিয়ে দিয়েছে, অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলির উপর জোর করে হিন্দি ভাষা শেখার ফরমান চাপিয়ে দেওয়া হলে দেশের বহুত্ববাদী চিন্তাধারায় আঘাত লাগবে। তামিলনাড়ুর এডিএমকে সরকারের শিক্ষামন্ত্রী কেএ সেঙ্গোত্তাইয়ান জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা কেন্দ্রের এই নীতি মানবেন না। ‘‘তামিলনাড়ু দু’টি ভাষার নীতি নিয়েই চলবে। শুধু তামিল ও ইংরেজিই শেখানো হবে।’’– বলেছেন তিনি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ই পলানিস্বামী নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখছেন। দক্ষিণের অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ কমল হাসনের বক্তব্য, ‘‘আমি নিজে হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছি। কিন্তু হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।’’ বিরোধীদের তরফে অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষায় গৈরিকীকরণের লক্ষ্যে সঙ্ঘ পরিবারের বরাবরের কৌশল— ‘হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান’। নয়া শিক্ষা নীতির খসড়ায় তারই প্রতিফলন।

বিতর্ক ডালপালা ছড়াতে শুরু করতেই কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভাড়েকর জানিয়ে দেন, “কোনো ভাষাই কারও উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য নেই। এটি কমিটির তৈরি একটি খসড়া প্রতিবেদন। এর উপর জনসাধারণের মতামত পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেবে সরকার”। প্রসঙ্গত, প্রথম মোদী সরকারের ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপির নির্বাচনী ইসতেহারে নতুন শিক্ষানীতি চালুর প্রতিশ্রুতি ছিল। তবে গত পাঁচ বছরে তা বাস্তবায়িত না-হলেও দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে নরেন্দ্র মোদী একশো দিনের মধ্যেই তা চূড়ান্ত করতে চাইছে।

Exit mobile version