#ভোপাল: মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে এক জন ‘দেশভক্ত’ হিসাবেই ফের তুলে ধরলেন মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বিজেপি প্রার্থী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। তাঁর ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের তালিকায় নয়া সংযোজন করে তিনি বলেন, “গান্ধীকে হত্যাকারী নাথুরাম গডসে এক জন দেশভক্ত ছিলেন, এবং থাকবেনও”। এহেন মন্তব্যের পরেই দলের অন্দরেই বিপাকে পড়েন প্রজ্ঞা।
সম্প্রতি নাথুরাম গডসের প্রসঙ্গ তুলে কমল হাসন বলেছিলেন, ‘‘ভারতের প্রথম উগ্রপন্থী এক জন হিন্দুই ছিলেন। তিনি মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসে।’’ সেই বিষয়টি নিয়েই ভারতের মাটিতে ‘হিন্দু সন্ত্রাস’ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় প্রজ্ঞাকে। তখনই তিনি করে বসেন বিতর্কির মন্তব্য। নাথুরাম গডসেকে দেশপ্রেমিক বলার পাশাপাশি প্রজ্ঞা বলেন, ‘‘যাঁরা নাথুরাম গডসেকে সন্ত্রাসবাদী বলেন, তাঁদের নিজেদের নিয়ে ভাবা উচিত। নির্বাচনের ফল বেরোলেই এরা জবাব পেয়ে যাবেন।’’
প্রজ্ঞার এই মন্তব্যের পরই ঝড় উঠেছে দেশের রাজনৈতিক মহলে। জাতির জনকের প্রতি এ হেন মন্তব্যের জন্য দেশের প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলই তাঁর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে। প্রজ্ঞার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ভোপালের কংগ্রেস প্রার্থী দিগ্বিজয় সিং বলেছেন, ‘এজন্য দেশবাসীর কাছে বিবৃতি দিয়ে মোদিজি, অমিতজি এবং রাজ্য বিজেপির ক্ষমা চাওয়া উচিত। নাথুরাম গডসে একজন খুনি। তাকে প্রশংসা করা দেশপ্রেম নয়, এক ধরনের পাগলামো।’ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আসরে নেমেছে বিজেপি। তড়িঘড়ি বিবৃতি দিয়ে তাঁরা জানিয়েছে, ‘‘আমরা ওঁর মন্তব্যের সমালোচনা করছি। বিজেপি এই মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে না। আমাদের দল প্রজ্ঞার কাছে এর ব্যাখ্যা চাইবে। ওঁর জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’ অবশেষে দলকে পাশে না পেয়ে এক ঘণ্টার মধ্যেই নিজের মন্তব্য ফিরিয়ে নেন বিজেপি প্রার্থী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। তাঁর এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন বলে জানা গিয়েছে।
পুরো নির্বাচন পর্বেই একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করে দলকে বিপাকে ফেলেছেন প্রজ্ঞা। ২৬/১১ মুম্বই হামলার সময় সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে লড়াইয়েনিহত হেমন্ত করকরের মৃত্যু তাঁর অভিশাপেই হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন প্রজ্ঞা। এ ছাড়া বাবরি মসজিদ ভাঙার জন্যও নিজেকে গর্বিত বলে প্রচারের আলোয় এসেছিলেন এই নির্বাচনপর্বেই। তাঁকে নিরস্ত করতে তাঁর প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু প্রজ্ঞা যে দমবার নন, তা ফের প্রমাণিত হল জাতির জনকের হত্যাকারীকে দেশপ্রেমিক তকমা দেওয়ার মধ্যেই।