#নয়াদিল্লি: ইতিমধ্যেই নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার ছ’টি অভিযোগে ছাড় পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এ দিকে কংগ্রেসের অভিযোগ, ওই একই অভিযোগে শাস্তি পেয়েছেন অন্য নেতারা। কোন যুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীকে বেকসুর ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তা আজ কমিশনের আইনজীবীর কাছে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ। প্রধানমন্ত্রীকে ছাড়ের নির্দেশিকা সঙ্গে না থাকায় আগামী বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন সেই কাগজ আদালতকে জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কমিশন।
নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে নির্বাচন কমিশন ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছে, এই দাবির সপক্ষে কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেবকেও প্রমাণ দাখিল করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। শিলচরের কংগ্রেস সাংসদের পক্ষে সওয়াল করছেন আইনজীবী কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি। আদালতে তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন অকারণে মোদি ও শাহর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের তরফে তোলা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। মোদী ও শাহর ঠিক কোন বক্তব্যে নালিশ জানিয়েছিল কংগ্রেস? গতমাসে লাটুরে প্রথম বারের ভোটারদের উদ্দেশে মোদীর আহ্বান ছিল, পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার শহিদ ও বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক যাঁরা করেছেন তাঁদের নামে ভোট দিন। এটি ছিল প্রথম অভিযোগ। পরেরটি ১ এপ্রিল ওয়ার্ধায়। সেখানে ভোটারদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেরলের ওয়ানাড়ে সংখ্যালঘু ভোট বেশি। সেই কারণেই রাহুল গান্ধী ওই কেন্দ্র বেছে নিয়েছেন। এই দুটি ভাষণের অডিও-ভিডিও–সহ কমিশনে নালিশ জানিয়েছিল কংগ্রেস। মূল আবেদনে কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেবের বক্তব্য ছিল, দলের তরফে জমা–করা অভিযোগুলির নিষ্পত্তি করছে না নির্বাচন কমিশন। আদালত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলার পর সব অভিযোগের ক্ষেত্রেই মোদীকে ছাড় দিয়েছে কমিশন। তাই ফের আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে কংগ্রেস।
যদিও প্রধানমন্ত্রীকে ক্লিনচিট দেওয়া নিয়ে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তিন মুখ্য কমিশনারের মধ্যে। আজ এ নিয়ে উপমুখ্য নির্বাচন কমিশনার সন্দীপ সাক্সেনা বলেন, ‘‘তিন নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে মতপার্থক্য হতেই পারে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের উপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে।’’ শুনানিতে কমিশন কর্তাদের মতপার্থক্যের উল্লেখ করে সুস্মিতার আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি প্রধানমন্ত্রীকে যে ছ’টি অভিযোগ থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে অন্তত পাঁচটি অভিযোগে মোদীকে একতরফা ছাড় দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন এক নির্বাচন কমিশনার। ওই একই শব্দ ব্যবহার করায় অন্য নেতা-নেত্রীদের শাস্তি শুনিয়েছে কমিশন।’’ আচরণবিধি ভঙ্গের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা হওয়া উচিত, তা নিয়ে একটি গাইডলাইন বানিয়ে দেওয়ার জন্যও আদালতের কাছে আবেদন করেন সিঙ্ঘভি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তখন প্রধানমন্ত্রীকে কোন যুক্তিতে ছাড় দেওয়া হল, তার লিখিত নির্দেশ দেখতে চায়। কমিশনের কাছে তা না থাকায় বুধবার তা আদালতকে জমা দিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, গত শনিবার উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ে রাজীব গান্ধী সম্পর্কে যে কুকথা প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তার ভিত্তিতে সোমবার ফের নতুন অভিযোগ কমিশনের কাছে দায়ের করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।