Site icon The News Nest

নিষেধাজ্ঞা চাপালে ‘অন্য পথ’,আমেরিকাকে হুমকি কিমের

Donald Trump and Kim Jong Un shake hands after signing history peace treaty in Pyeongchang 2018

সুখের সেদিন...

ফের আমেরিকাকে হুমকি দিলেন কিম জং উন। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হওয়া সত্ত্বেও আমেরিকা উত্তর কোরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলেনি। এরকম চলতে থাকলে ‘অন্য পথ’ বেছে নিতে বাধ্য হবেন বলে জানালেন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উন।
ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া তিরিশ মিনিটের বক্তৃতায় চেয়াম্যান জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের ‘দ্রুত গতিতে’ উন্নতি হতে পারে যদি মার্কিন প্রশাসন ‘আদানপ্রদান’-এ ভরসা রাখে। এই সূত্রেই তিনি জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি ফের দেখা করতে চান। কিমের কথায়, ‘আমি এমন একটা ফলাফলের দিকে এগোতে চাই যাকে আন্তর্জাতিক স্তরে স্বাগত জানানো হবে।’ বিশদে কিমের বক্তব্য,‘আমেরিকা যেন আমাদের জনতার ধৈর্য দেখে ভুল ধারণার বশবর্তী না হয়। ওরা যদি একতরফা দাবি, নিষেধাজ্ঞা, চাপ তৈরির পথেই চলে, তা হলে আমাদের কাছে সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই একমাত্র গুরুত্ব পাবে। আমাদের উপদ্বীপে শান্তি বজায় রাখতে নতুন পথে চলতে হবে।’ তবে নতুন পথটা কী ধরনের হবে, সে সম্পর্কে কোনও ব্যাখ্যা দেননি কিম।
কিমের এই বক্তৃতার মূল শ্রোতা তাঁর দেশের মানুষ। পিয়ংইয়্যাং আগামী এক বছরে কী কী বিষয়ে গুরুত্ব দেবে, তা নিয়ে প্রতি বছরে বক্তব্য রাখেন চেয়ারম্যান। থাকে অসংখ্য নিষেধের নির্দেশ। কিন্তু এ বার তাঁর বক্তৃতার ধরন অতীতের তুলনায় অনেকটাই আলাদা। বাবা আর দাদুর ছবি পাশে নিয়ে ‘অন্য রকম’ কিমকে কথা বলতে দেখা গিয়েছে বলে মনে করছে সোলের সংবাদমাধ্যম। সাংবাদিকদের মতে, কিম ২০১৮ সালকে ‘গতিময়’ বছর হিসেবে দেখেছেন। সেই গতি ২০১৯-এও বজায় রাখতে চান তিনি।
উল্লেখ্য, বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে দেশটি। তার জেরে গত কয়েক বছরে একাধিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা চেপেছে উত্তর কোরিয়ার উপর। তবে গতবছর পরিস্থিতি কিছুটা শোধরায়। যখন নিজে থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছে প্রকাশ করেন কিম জং উন। সেই মতো জুন মাসে সিঙ্গাপুরে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে শীর্ষ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর ট্রাম্প প্রকাশ্য ঘোষণায় বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় এগিয়ে এলে ওয়াশিংটন পিয়ংইয়ংয়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। ওই বৈঠককে তিনি ‘ঐতিহাসিক ও সফল’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।তার পর কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। গোপনে পিয়ংইয়ং পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজ জারি রেখেছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠলেও, তাদের বেশ কিছু অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংসের খবরও সামনে এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতেও দেখা যায়নি তাদের। তবে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়নি এখনও পর্যন্ত। তাতেই চটেছেন কিম। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০১৯ সালের মধ্যে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা না তুললে ফের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে পারে কিম প্রশাসন। মার্কিন প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে দ্বিতীয়বার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা নিয়েও এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা না তুললে কিমের সঙ্গে আমেরিকার চলতে থাকা মতবিরোধ থেকে ফের সংঘাতের সূত্রপাত হয়ে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Exit mobile version