মুম্বই : মহারাষ্ট্রের আলিবাগের কিহিমে প্রাসাদপম এক বাংলো তৈরি করেছিলেন নীরব মোদি ৷ শুক্রবার দুপুরে ১০০ কোটির সেই বাংলোই ভাঙা হল ডিনামাইটের বিস্ফোরণে। ৩৩ হাজার বর্গফুটের এই বাংলো ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার। বাংলোটি ভাঙার ব্যপারে অনেকদিন আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এতদিনে তা কার্যকর করা হল। বৃহস্পতিবার বাংলোর চারদিক খুঁড়ে বের করা হয় বাংলোর সবকটি পিলার। তারপর সেই পিলারে বিস্ফোরক লাগিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে বাংলোটি ভেঙে পড়ে।
শম্ভুরাজে যুব ক্রান্তি নামের একটি এনজিও ২০০৯ সালে বম্বে হাইকোর্টে একটি পিআইএল দাখিল করে। ওই এনজিও-র দাবি ছিল আলিবাগের বেশ কিছু বাংলো, হোটেল এবং রিসর্ট সমুদ্রের ধারের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করছে। এমনকী বিচের কাছে থাকা ছোট ছোট গ্রামও এইসব বাংলো এবং হোটেল রিসর্টের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি করে ওই এনজিও। এরপরেই বম্বে হাইকোর্ট এইসব বাংলো, হোটেল, রিসর্টকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে এবং ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। বেআইনি তালিকাভুক্ত এই সব বাংলোর মধ্যেই ছিল নীরব মোদীর বাংলোও।
অনেকদিন ধরেই এই বাংলো ভাঙার কাজ চলছিল৷ কিন্তু বাংলোর পিলার এবং গাঁথনি মজবুত হওয়ায় বেগ পেতে হয় কর্মীদের৷ কেবলমাত্র কয়েকটি কাঁচের জানলা, দরজা ভাঙা সম্ভব হয়৷ কিন্তু মেঝে, পিলার এবং ছাদ ভাঙা সম্ভব হচ্ছিল না৷ সূত্রের খবর, একপ্রকার বাধ্য হয়েই ডিনামাইট দিয়ে বাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মহারাষ্ট্র সরকার৷ বৃহস্পতিবার বাংলোর চারদিক খুঁড়ে বের করা হয় বাংলোর সবকটি পিলার। তারপর সেই পিলারে বিস্ফোরক লাগিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে বাংলোটি ভেঙে পড়ে।রাইগড়ের জেলাশাসক বিজয় সূর্যবংশী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বাড়ি ভাঙার কাজে নিযুক্ত ছিল ৫০ কর্মী ৷১০৮টি ডিটোনেটর ব্যবহার করে করে বাংলোটিকে ভাঙা হয়েছে। এখন ধ্বংসস্তূপ সরাতে কমপক্ষে ১০ দিন লাগবে। বাংলোর মধ্যে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র নিলাম করা হবে।
মুম্বই থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে কিহিম বিচের কাছে এই বিলাসবহুল বাংলো বানিয়েছিলেন হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী। দোতলা বাংলোর চারদিকে ছিল আতিশয্যের ছোঁয়া। বিশাল পার্কিং লট, সুবিশাল সুইমিং পুল ছাড়াও বাংলোর চারদিক ঘেরা ছিল শক্ত ধাতব গেট দিয়ে। কড়া নিরাপত্তায় মোড়া থাকত গোটা বাংলো। বিশ্বের বিভিন্ন বিলাসবহুল রিসর্টে যা যা সুযোগ সুবিধা থাকে তার সবই এখানে ছিল। উল্লেখ্য, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ১৩ হাজার কোটি টাকা হাতানোর অভিযোগ নীরব মোদীর বিরুদ্ধে। তবে গোয়েন্দাদের টনক নড়ার আগেই দেশ ছেড়ে পালান তিনি। তার পর একবছরেরও বেশি পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাঁকে ফেরানো সম্ভব হয়নি।