Site icon The News Nest

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে এইচআইভি, শিশু-সহ সংক্রমণের শিকার পাঁচশোরও বেশি

pakistan2

In this image taken on May 9, 2019, a Pakistani paramedic takes a blood sample from a baby for a HIV test at a state-run hospital in Rato Dero in the district of Larkana of the southern Sindh province. Parents nervously watch over their children as they jostle in line to be tested for HIV in a village near Pakistanís Larkana amid a sudden outbreak among its young who have allegedly been infected by a doctor using a contaminated syringe. - TO GO WITH: Pakistan-health-HIV-children, SCENE by Ashraf KHAN / AFP / RIZWAN TABASSUM / TO GO WITH: Pakistan-health-HIV-children, SCENE by Ashraf KHAN

#সিন্ধ: একটার পর একটা। গ্রামের পর গ্রাম। আতঙ্ক আর হাহাকারে ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপচে পড়েছে ভিড়। সরকারি সূত্রে সংখ্যাটা ৪০০ হলেও, বেসরকারি হিসেবে সংক্রমণের শিকার ৫০০-রও বেশি মানুষ। দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে গত কয়েক দিনে পাঁচশোরও বেশি মানুষ এইচআইভি সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই শিশু।

প্রশাসন সূত্রে খবর, গত মাসে সিন্ধু প্রদেশের লারকানা অঞ্চল লাগোয়া ওয়াসাও গ্রামে কয়েকজন এইচআইভিতে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে সেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। চলতি মাসে ওই গ্রামেরই শতাধিক মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। এইচআইভি সংক্রমণ ছড়িয়েছে আশপাশের গ্রামগুলিতেও। ঘরে ঘরে সংক্রমণের শিকার মহিলা থেকে শিশু। সংখ্যাটা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এলাকার লোকজন। কী ভাবে ছড়াল এই সংক্রমণ?  গ্রামবাসীদের দাবি, স্থানীয় কিছু ‘হাতুড়ে’ ডাক্তারদের গাফিলতিতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। কোনও ভাবে টীকাকরণের সময় বা শিশু-মহিলাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার সময়ে সংক্রামিত সিরিঞ্জ ব্যবহার করেছিলেন ওই ডাক্তাররা। সেখান থেকেই এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে তাদের শরীরে। হু হু করে বাড়তে থাকে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা। এইডস এর আতঙ্ক এতটাই যে, দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ছুটে আসছেন পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। বানানো হয়েছে অস্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

পাকিস্তান স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফেও শিকার করে নেওয়া হয়েছে যে দেশ জুড়ে হঠাৎ করেই এইআইভি সংক্রমণের শিকার হয়েছেন অন্তত ৫০০ জন, যাঁদের অধিকাংশই শিশু। কোয়াক ডাক্তারদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছে তারা। যদিও পাকিস্তানের স্বাস্থ্যব্যবস্থাই এর জন্য দায়ী, এই দাবি করছেন আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।যে কোনও সময় বড় ধরনের এইচআইভি সংক্রমণ দেখা দিতে পারে, এই আশঙ্কা সব সময়ই ছিল পাকিস্তানকে ঘিরে। রাষ্ট্রপুঞ্জ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘পাকিস্তানে এই মুহূর্তে প্রায় ৬ লক্ষ কোয়াক ডাক্তার আছেন। তার মধ্যে শুধু সিন্ধেই আছেন অন্তত ২ লক্ষ ৭০ হাজার কোয়াক ডাক্তার।’’ আর এই কোয়াক ডাক্তার নিয়ে আশঙ্কার কথাই শুনিয়েছেন সিন্ধের এইডস কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ম্যানেজার সিকান্দার মেনন। তাঁর উদ্বেগ, ‘‘টাকা বাঁচাতে গিয়ে এই কোয়াক ডাক্তাররা অনেক সময়ই একটি সিরিঞ্জ দিয়ে অনেক রোগীকে ইঞ্জেকশন দিয়ে থাকে। এইআইভি বা এইডস ছড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ এটাই।’’ একই অভিযোগ বুশরা জামিলেরও। করাচির আগা খান ইউনিভার্সিটির গবেষক বুশরার দাবি, ‘‘একই সিরিঞ্জের বার বার প্রয়োগ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিনা পরীক্ষা নিরীক্ষায় রক্তদান, লাইসেন্স ছাড়াই বা ভুয়ো লাইন্সেসে হাতুড়েদের চিকিৎসা পদ্ধতি, এই সব কিছুই এই মহামারীর জন্য দায়ী। এটা একদিনের ঘটনা নয়, দিনের পর দিন এই অন্যায় চলে আসছে পাকিস্তানে। সার্বিক ভাবে তারই প্রতিফল ঘটেছে। ’’

 

Exit mobile version