নয়াদিল্লি ঃ পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গিহানার জবাব দিল ভারত। বায়ুসেনার সূত্র থেকে জানা গিয়েছে,মঙ্গলবার সাড়ে তিনটে নাগাদ পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে পড়ে বায়ুসেনার মিরাজ ২০০০ ফাইটার বিমান। বেছে বেছে হামলা চালানো হয় জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিঘাঁটিগুলিতে।জানা গিয়েছে, ১০০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয় এই হামলায়। মূলত, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের খাইবার-পাখতুনওয়া এলাকায় এই হামলা চালানো হয়।
প্রায় ২১ মিনিট ধরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আকাশে ছিল ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলি। ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর, চকোটিতে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে রাত ৩টে ৫৮ মিনিট থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত। মুজাফ্ফারাবাদে বোমাবর্ষণ চলে রাত ৩টে ৪৮ মিনিট থেকে ৩টে ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। হয়েছে। এই হামলায় প্রচুর জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি সেনা সূত্রের। জইশের অন্তত ৩টি কন্ট্রোল রুম এবং বেশ কয়েকটি লঞ্চ প্যাড ধ্বংস করা হয়েছে। বায়ুসেনার একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর জঙ্গি ঘাঁটিগুলি পাকিস্তানের তরফে পুলওয়ামার হামলার পর সরিয়ে নেওয়া হয়। ফলে বেশ খানিকটা ভিতরে ঢুকে হামলা চালানো হয় ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে। জানা গিয়েছে, বালাকোট খাইবার-পাখতুনওয়ার একটি শহর। যা নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ভিতরে। সেখানেই জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান জঙ্গি ক্যাম্প অবস্থিত। ফলে সেখানে গিয়েই এই হামলা পুলওয়ামা হামলার যোগ্য জবাব বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল পাক মদতপুষ্ট জইশ ই মহম্মদ। প্রাণ গিয়েছিল ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের। ১২ দিনের মাথায় পাকিস্তানকে উপযুক্ত জবাব দিল ভারত।২০১৯-এর ২৬ ফেব্রুয়ারির এই স্ট্রাইক মনে করাচ্ছে ২০১৬-র ২৯ সেপ্টেম্বরকে। উরিতে জঙ্গি হানার বদলা নিতে ওই দিন পাকিস্তানে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী। অনেকেই মঙ্গলবার ভোরের অপারেশনকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পার্ট টু বলতে শুরু করেছেন। এই অভিযান প্রসঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। যদিও তাঁর দাবি, পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিরোধের মুখে পড়ে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি ফিরে যায়। তিনি জানিয়েছেন, মুজফ্রাবাদ থেকে ভারতীয় বিমানগুলি প্রবেশ করে। তাঁর দাবি, পাকিস্তানের জবাবে বালাকোটে বোমা ফেলেই চলে যায় ভারতীয় বিমানগুলি। এই হামলায় বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। যদিও এখনও পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি।পাকিস্তানের পাল্টা প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় এই অভিযানের পর আন্তর্জাতিক সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।