নয়াদিল্লি: দেশের যুব সম্প্রদায়, কৃষক, ব্যবসায়ী ও প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গত ৫ বছরের কাজকর্ম হয়ে উঠেছে ‘সবচেয়ে ভয়াবহ ও ধ্বংসাত্মক’। এ বার তাঁকে আমাদের বিদায় জানানো উচিত।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে রবিবার এ কথা বলেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। দেশে এ বার ‘মোদী হাওয়া’ উঠেছে বলে সম্প্রতি যে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী, তাকে উড়িয়ে দিয়ে এ দিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘মানুষ ঠিকই করে ফেলেছেন, এই সরকারটাকে তাড়াতে হবে। কারণ, তাঁরা বুঝে ফেলেছেন, এই সরকার দেশের আপামর মানুষের সার্বিক উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। কী ভাবে ক্ষমতায় টিঁকে থাকতে হবে, শুধু সেই কথাই ভাবে। আর তার জন্য সমাজের মধ্যে বিভাজনের রাস্তা নিয়েছে।’’ মনমোহন সিং-এর অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর পাঁচ বছরের শাসনকাল “কল্পনাতীত পরিমাণে” দুর্নীতির “দুর্গন্ধ” এবং সম্ভবত নোটবন্দিই স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে “বড় দুর্নীতি”।
শুধুমাত্র অর্থনীতিই নয়, বিদেশনীতির প্রশ্নেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একহাত নেন মনমোহন সিং। নরেন্দ্র মোদীর পাকিস্তান নীতি “বিশৃঙ্খল” হওয়ার কারণেই ডিগবাজি লেগেই থাকে বলে মন্তব্য করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, সে বিনা নিমন্ত্রণে পাকিস্তানে যাওয়াই হোক বা পাঠাকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে আইএসআইকে ঢুকতে দেওয়াই হোক। ১৯৯০ এ অর্থনৈতিক সংস্কারের অন্যতম কারিগর হিসেবে মনমোহন সিংকে ধরা হয়।তাঁর অভিযোগ, মোদী সরকারের আমলে দেশের অর্থনীতি “ধংসাত্মক জায়গায়” পৌঁছেছে।বর্তমান সরকারের দিকে বাগাড়ম্বরপূর্ণ ভাষণের অভিযোগ তুলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সরকারের প্রতি বীতশ্রদ্ধ সাধারণ মানুষ।
বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদ এবং সন্ত্রাসবাদকে নির্বাচনে টেনে আনার প্রসঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন নরেন্দ্র মোদীর দায়বদ্ধতা নিয়ে।তিনি বলেন, এটা খুবই “দুর্ভাগ্যজনক” ঘটনা ছিল যে, পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে জঙ্গি হামলায় যখন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হলেন, সেই সময় নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠক না করে জিম করব্যাট পার্কে “ছবির শ্যুটিং” করছিলেন নরেন্দ্র মোদী।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দাবি, পুলওয়ামায় লজ্জাজনক গোয়েন্দা ব্যর্থতাই সন্ত্রাসবাদ দমনে সরকারের প্রস্তুতির চিত্র।