নয়াদিল্লি: সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পরই দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে পূর্ব উত্তরপ্রদেশ কংগ্রসের সাংগঠনিক দায়িত্ব। এ বারের লোকসভা ভোটে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে দলের প্রচারে মূল ভূমিকা পালন করে চলেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা-ই। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গের তারকা প্রচারকের তালিকতেও কংগ্রেসের তরফে অন্তর্ভুক্ত করা হল তাঁর নাম।
মঙ্গলবার সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে নির্বাচন কমিশনের কাছে পশ্চিমবঙ্গে স্টার প্রচারকদের তালিকা পেশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, শুরুতেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর নাম। তার পর সনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিংহ, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী সহ মোট চল্লিশ জন নেতার নাম। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছে, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, নবজ্যোত সিংহ সিধু, মহম্মদ আজহারউদ্দিন, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহও। কংগ্রেসের একটি সূত্রের মতে, চল্লিশ জনের নাম কমিশনের কাছে পেশ করা হয়েছে ঠিকই। তবে সবাই যে প্রচারে আসবেন তা নয়। কংগ্রেসের মূল সাংগঠনিক শক্তি ও সম্ভাবনা হল উত্তরবঙ্গে। চেষ্টা করা হবে, সেখানেই যাতে সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কা অন্তত একবার করে প্রচারে আসেন।
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সূত্রে খবর, গত শনিবার মালদহের চাঁচলে জনসভা করে ফেরার পর রাহুল গান্ধীর নির্দেশেই পশ্চিমবঙ্গে দলের তারকা প্রচারক বা স্টার ক্যাম্পেনার-এর তালিকায় রাখা হয়েছে প্রিয়ঙ্কার নাম। উল্টো দিকে পশ্চিমবঙ্গে আসার ব্যাপারে তাঁর নিজেরও যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে। তবে প্রচারের সফরসূচি নির্দিষ্ট না-হওয়া পর্যন্ত তাঁর বাংলায় আসার দিনক্ষণ সম্পর্কে বিশদ জানানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনিতে ভোটের মুখে দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে প্রিয়ঙ্কাকে প্রচারে চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে। একই সঙ্গে রয়েছে উত্তরপ্রদেশে রয়েছে তাঁর বাড়তি দায়িত্ব। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের লোকসভা কেন্দ্রগুলির প্রচারের ক্ষেত্রের মূল ভূমিকা তাঁরই।
বস্তুত সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কাকে প্রচারে নামানোর নেপথ্যে অন্য কৌশলও রয়েছে কংগ্রেসের। কেন্দ্রে শাসক দল বিজেপি-র নেতাদের মধ্যে একমাত্র নরেন্দ্র মোদীকে দেখেই ভিড় হয়। এমনকি অমিত শাহ-র সভাতেও স্বতঃস্ফূর্ত ভিড় বিশেষ দেখা যায় না। ফলে মোদীকে একাই প্রায় দেড়শর উপর সভা করতে হবে। সেই তুলনায় রাহুল, সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কা প্রত্যেকেরই ভিড় টানার ক্ষমতা রয়েছে। তিন জনের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া মোদীর পক্ষে কঠিন হবে বইকি। এদিকে বাংলায় সনিয়া-প্রিয়ঙ্কার সভা নিয়ে তৃণমূলও উচ্ছ্বসিত। কারণ, তাঁরা মনে করছেন, বিরোধী ভোটে কংগ্রেস যতটা ভাগ বসাতে পারবে ততই ভাল। উল্লেখ্য, এর আগেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র রাহুলকে জানিয়ে ছিলেন, বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে প্রিয়ঙ্কাকে পাঠানো হোক। এখনও পর্যন্ত যা খবর, সাত দফার লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে এ রাজ্যে দু-টি জনসভায় অংশ নিতে পারেন প্রিয়ঙ্কা। তবে সেই জনসভাগুলি ঠিক কোথায় হবে, সেটা প্রদেশের সঙ্গে আলোচনা করেই স্থির করবেন কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব।