#নয়াদিল্লি: আশার আলো দেখছে মোদী সরকার! ঋণ খেলাপিতে অভিযুক্ত মেহুল চোকসীর অ্যান্টিগুয়ার নাগরিকত্ব বাতিল হতে পারে। এমনটাই আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী গ্যাসটন ব্রাউন। অ্যান্টিগুয়া এবং বারমুডার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউন জানিয়েছেন, তাঁর দেশকে অর্থ তছরুপে অভিযুক্তদের জন্য স্বর্গরাজ্য করে তুলতে চান না।
পিএনবি থেকে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঋণ নিয়ে ফেরত না দিয়ে ২০১৮ সালের গোড়াতেই ভারত ছেড়ে পালিয়ে যান দুই হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী ও তাঁর মামা মেহুল চোক্সী। তার পরই এ নিয়ে সারা দেশ তোলপাড় হয়। পরে জানা যায়, লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছেন দুই রত্ন ব্যবসায়ী। নীরব লন্ডনে থেকে গেলেও অ্যান্টিগাতে চলে যান মেহুল চোক্সী। সেখানকার নিয়ম অনুযায়ী সহজ শর্তেই নাগরিকত্ব মেলে মেহুলের। কয়েক মাস আগে লন্ডনের রাস্তায় নীরব মোদীর উপস্থিতি নিয়ে হইচই হয়েছিল। লন্ডনেই গ্রেফতার হয়ে জেলবন্দি নীরব মোদী। তবে অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব নিয়ে বহাল তবিয়তেই ছিলেন মেহুল। দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার ২ মাস আগেই সে দেশে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। মেহুলের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতি রয়েছে কিনা সে নিয়ে ভেরিফিকেশন হয় এবং ভারতের তরফে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়া বলে অভিযোগ।
এ হেন মেহুল চোক্সীর নাগরিকত্ব এখন কেন বাতিল করতে চাইছে অ্যান্টিগা? ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, এর পিছনে রয়েছে ভারতের প্রবল কূটনৈতিক চাপ। নাগরিকত্ব দেওয়ার পর থেকেই ক্যারিবিয়ান এই দেশটির উপর চাপ তৈরি করছিল বিদেশ মন্ত্রক। নাগরিকত্বের আবেদনকারীর ফৌজদারি অপরাধের পূর্ব ইতিহাস না দেখেই কেন নাগরিকত্ব দেওয়া হল, তা নিয়ে ক্রমাগত চাপ তৈরি করতে থাকেন ভারতীয় কূটনীতিকরা। সেই চাপের কাছেই শেষ পর্যন্ত মাথা নুইয়ে চোক্সীর নাগরিকত্ব খারিজই শুধু নয়, তাঁকে ভারতে ফেরত পাঠানোর বিষয়েও সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রী।
গাস্টন ব্রাউন বলেছেন, ‘‘এমন ভাবার কোনও কারণ নেই যে আমাদের দেশ ফৌজদারি বা আর্থিক অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য। এটা ঠিক যে মেহুল চোক্সী কারও সাহায্যে আমাদের দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সেই নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে।’’অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘বর্তমানে বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। বাকি প্রক্রিয়া আমাদের শেষ করতে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। আমরা ভারতকে এই বার্তা দিয়েছি যে অপরাধীদেরও আইনি সাহায্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে। চোক্সীর ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু আমি আশ্বস্ত করছি, এক বার তাঁর সামনে আইনের সব দরজা বন্ধ হলেই তাঁকে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে।’’
মেহুল চোক্সীর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার জন্য বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ইতিমধ্যেই অ্যান্টিগার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথাবার্তাও শুরু হয়েছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর। তবে শেষ পর্যন্ত কবে বা কত দিন পর মেহুল চোক্সীর প্রত্যর্পণ সম্ভব হবে, সে বিষয়ে এখনই অ্যান্টিগা সরকার বা ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।