Site icon The News Nest

বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খান

soumitra khan. 2

পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অভিযোগ করে মঙ্গলবারই হইচই ফেলে দিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খান। ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই তিনি যোগ দিলেন বিজেপিতে। বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন তিনি। নয়াদিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় সদর দফতরে ধর্মেন্দ্র প্রধান, মুকুল রায় এবং রাহুল সিংহ এ দিন সৌমিত্র খানকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। সেখানেই আনুষ্ঠানিক ভাবে সৌমিত্রর বিজেপিতে যোগদানের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর হাতে বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদও তুলে দেওয়া হয়েছে।

বিজেপিতে যোগ দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন,’বাংলাতে কোনও গণতন্ত্র নেই। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভোট দিতে পারেনা। দেশের একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ যেখানে সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই।’
এখানেই শেষ নয়। সৌমিত্র অভিযোগ করেন,’তৃণমূল এখন পিসি-ভাইপোর দল হয়ে গিয়েছে। ওই দলে আর কারও কোনও গুরুত্ব নেই। পিসি-ভাইপো মিলে গোটা বাংলায় পুলিশ রাজ কায়েম করেছেন। বাংলায় কোনও গণতন্ত্র নেই। এখন শুধু পুলিশতন্ত্র চলছে।’ দলত্যাগী সাংসদের তোপ, ‘আমি একজন সাংসদ, আমারই জীবনের নিরাপত্তা নেই। তা হলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা ভাবুন!’সৌমিত্র আরও দাবি করেছেন যে, তিনি একা নন। তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত আরও অনেক জনপ্রতিনিধি বিজেপি-তে যোগ দেবেন। তাঁরা কারা, সে বিষয়ে সৌমিত্র অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
সৌমিত্রর এই দলবদল নিঃসন্দেহে তৃণমূলের জন্য বড় অস্বস্তি। লোকসভা নির্বাচনের কাছাকাছি এসে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সঙ্ঘাত যখন তুঙ্গে, তখন তৃণমূলের সংসদীয় দলে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপি উল্লসিত। এই প্রথম তৃণমূলের কোনও লোকসভা সদস্য বিজেপিতে যোগ দিলেন।
সৌমিত্র খান যে দলবদল করতে পারেন, তা নিয়ে গুঞ্জন মাসখানেক ধরেই বাড়ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর একটি পোস্ট বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রকাশ্যে এনেছিল। রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে তৈলমর্দনই একমাত্র পথ— তৃণমূল সাংসদের পোস্টটির সারকথা ছিল এই রকমই। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছে এবং তিনি ক্রমশ বিজেপির কাছাকাছি যাচ্ছেন— এমন তত্ত্বও ভাসছিল রাজনীতির হাওয়ায়। সাম্প্রতিক বিতর্কটি হয় মঙ্গলবার রাতে। যখন তিনি রীতিমতো ফেসবুক লাইভ করে খুনের আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তাঁর আপ্তসহায়ককে অপহরণের অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগের তির ছিল এক সরকারি অফিসারের দিকে।
২০১৪ সালে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রথমবার সাংসদ হয়েছিলেন সৌমিত্র। তাঁর রাজনৈতিক জীবন অবশ্য শুরু কংগ্রেসি হিসেবে। এর পর তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। বিধায়কও হন তিনি। এর পরই তৃণমূল তাঁকে লোকসভার টিকিট দেয়। যদিও সাংসদ হওয়ার পর থেকে তিনি বেশ কয়েকবার খবরের শিরোনামে এসেছেন। বর্ষার সময় সাঁতার কেটে একটি গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ও তাঁকে চর্চা হয়েছিল অনেক।

Exit mobile version