নয়াদিল্লি: মোদী জমানায় ৩৬জন ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী বিদেশে চম্পট দিয়েছেন। সোমবার অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড ভিভিআইপি চপার কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত সুশেন মোহন গুপ্তা’র জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ইডি। বিচারক অরবিন্দ কুমারের এজলাসে ইডি জানায় সাম্প্রতিক সময়ে বিজয় মালিয়া এবং নীরব মোদী ছাড়াও ৩৬ জন ব্যবসায়ী দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। সুতরাং সুশেন মহন গুপ্তাকে কোনভাবেই জামিনে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না।
সমাজে তার শিকড় অনেক গভীরে ছড়ানো রয়েছে ফলে তার পক্ষে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া সম্ভব নয়, সুশেন মোহন গুপ্তা’র এই যুক্তিকে খণ্ডন করে তদন্তকারী সংস্থার তরফে সরকারি আইনজীবী ডি.পি সিং এবং এন.কে মাত্তা বলেন, ”মালিয়া, ললিত মোদী, নীরব মোদী, মেহুল চোক্সী এবং স্টারলিং বায়োটেক লিমিটেডের সান্দেসারা ভাইদেরও সামাজিক শিকড় অনেক গভীরে ছড়ানো ছিল তবু তারা দেশ ছেড়েছে। এরকম ৩৬ জন ব্যবসায়ী গত কয়েক বছরে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছিল।”
সওয়াল চলাকালীন ইডি’র আইনজীবী এস ভার্মা আদালতে জানান, যে অগস্তা চপার কেলেঙ্কারির তদন্ত এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় এসে পৌঁছেছে এবং তদন্তকারী সংস্থা জানার চেষ্টা করছে কে সেই রহস্যময় ”আর জি”, একাধিকবার যার নামের উল্লেখ রয়েছে অভিযুক্ত সুশেনের ডায়রিতে। সুশেনের বিরুদ্ধে তথ্য নষ্ট করা এবং সাক্ষীদের প্রভাবিত করার অভিযোগও তোলেন ইডি’র আইনজীবী। তদন্তকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই তদন্ত সম্পন্ন করেছে এবং তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও দাখিল করেছে, এই যুক্তিতেই সুশেন মোহন গুপ্তা আদালতে জামিনের আবেদন করেন। জামিনের আবেদনে সুশেন মোহন জানান, তার অতীতের কার্যকলাপ প্রমাণ করে দেয় যে তার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার যে আশঙ্কা ইডি’র তরফে করা হচ্ছে সেটা সম্পূর্ণ অমূলক। তদন্ত চলাকালীন যখনই তাকে তদন্তের স্বার্থে ডাকা হয়েছে তখনই তিনি হাজির হয়েছেন এবং যথাযথ সহযোগিতা করেছেন।সব শুনে আদালত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সুশেন মোহন গুপ্তা’র জামিনের আবেদন মুলতুবি রাখে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেকে বারবার চৌকিদার হিসেবে দাবি করছেন। কিন্তু তাঁর এই দাবি যে ক্রমশ হাস্যকর পর্যায় পৌঁছে যাচ্ছে সম্ভবত খেয়াল করছেন না। ২০১৪ সালে জয়ের পর মোদী বলেছিলেন, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। কিন্তু তাঁর জমানা শেষে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, এটি নেহাৎই দাবি ছাড়া আর কিছু নয়। বরং জানা গেল মোদী জমানাতেই ঋণ খেলাপ করে বিদেশে চম্পট দিয়েছেন আরও ৩৬ জন ব্যবসায়ী। অথচ তিনি ভোট প্রচারে সমানে নিজেকে চৌকিদার বলে বুক চাপড়াচ্ছেন। তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা পিছনে দাঁড়িয়ে তা করতালি দিয়ে উদযাপন করছে। যদিও চাওয়ালা থেকে এই চৌকিদারে উত্তরণ বা অবতরণকে অতটা গুরুত্ব দিতে নারাজ আমআদমি।এতদিন পর্যন্ত সংবাদ মাধ্যম বিজয় মালিয়া, ললিত মোদী, নীরব মোদী ও মেহুল চোকসি কথাই বারবার বলে আসছে। কিন্তু সমসাময়িক সময়ে যে আরও ৩৬ জন ব্যবসায়ী পগার পার হয়েছেন সে কথা কোন মিডিয়ায় তেমন করে স্পষ্ট করেনি। বলা ভালো হয়তো এই তথ্য তাদের হাতে ছিল না। সোমবার আদালতে কেন্দ্রীয় সংস্থা স্বয়ং এই তথ্য জানায়।
এখন প্রশ্ন হল তাহলে নরেন্দ্র মোদী জমানায় দেশবাসী নতুন করে কি পেল। কেউ রসিকতা করে বলছেন নোটবন্দি ছাড়া বলার মত আর হয়নি। কিছুই বাকি যেটুকু হয়েছে সেটা সংঘ পরিবারের চেনা এজেন্ডা যা কিঞ্চিৎ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছে মোদী সরকার।