ভারত – পাকিস্তানকে সংযত হওয়ার বার্তা চিনের

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

বেজিং ঃ জইশ ই মহম্মদের ঘাঁটি ধ্বংসের পরে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রথম প্রতিক্রিয়া জানাল পাকিস্তানের দীর্ঘকালের মিত্র চীন ।কূটনৈতিকভাবে ‘সেফ করিডর’-এ থাকার জন্য উদ্দেশ্য ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশকেই সংযম রাখার বার্তা দিয়েছে বেজিং। তাদের আশা দু দেশই সংযম দেখাবে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করে চলবে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ওই হামলায় ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। তার বদলা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেনাবাহিনীকে ফ্রি হ্যান্ড দেন। সেইমতো মঙ্গলবার ভোররাতে ভারতীয় বায়ুসেনার ১২ টি মিরাজ ২০০০ বিমান পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটিতে ঢুকে বোমা ফেলে আসে। মোট ১ হাজার কেজি বোমা ফেলা হয়েছিল। প্রায় সাড়ে তিনশ জঙ্গি মারা গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে আছে মৌলানা মাসুদ আজহারের ভাই ও শ্যালক।পুলওয়ামায় হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল দ্বিধা ছিল না  বেজিংয়ের। কিন্তু  আর সেই পথে হাঁটল না তারা। উল্টে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিল চীন।

মঙ্গলবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বায়ুসেনার বোমাবর্ষণের খবর সামনে আসতেই বেজিংয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লু ক্যাঙ। সেখানে তিনি বলেন,’দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশ ভারত এবং পাকিস্তান। গোটা উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তাদের মধ্যে মজবুত সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা থাকা একান্ত প্রয়োজন। আশাকরি দু’পক্ষই সংযত হবে। আগ্রাসনের বদলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নতির চেষ্টা করবে।’

ভারতীয় বিদেশ সচিবের তরফে এই প্রত্যাঘাতকে প্রতিরোধের লক্ষ্যে অসামরিক অভিযান হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তা নিয়ে প্রশ্ন করলে লু ক্যাঙ বলেন,’সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল গোটা পৃথিবী।  তাতে সকলের সহযোগিতা কাম্য।’ এ ব্যাপারে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই এবং পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির মধ্যে সোমবার হওয়া এক বৈঠকের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন লু। একই পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁকে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে নিতে বলা হয়, যাতে সন্ত্রাস দমনে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে গোটা উপমহাদেশে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায়।  যদিও পুলওয়ামায় হামলার পরে চিন এক বিবৃতি দিয়ে বলে, নিহত সিআরপিএফ জওয়ানদের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সহানুভূতি আছে। বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কাছে এক শোকবার্তা পাঠিয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং লি বলেন, আমাদের দেশ দৃঢ়ভাবে সব রকমের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে। যদিও সেই বার্তায় পাকিস্তানের নাম করা হয়নি।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ বহুদিনের। জইশ-ই-মহম্মদ চাঁই ও কন্দহর বিমান ছিনতাইয়ের মূল চক্রী মাসুদ আজহারও সেখানেই রয়েছে। এর আগে, ২০১৬ সালে তারই নির্দেশে পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় একদল ফিদায়েঁ জঙ্গি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে হামলাও তারই নির্দেশে। হামলার পর ভিডিয়ো প্রকাশ করে তার দায়ও স্বীকার করে জইশ-ই-মহম্মদ। কিন্তু তা সত্ত্বেও হামলার দায় অস্বীকার করে ইমরান খান সরকার।

শুরু থেকেই মাসুদ আজহারকে আড়াল করে এসেছে চিন। পুলওয়ামায় হামলার পরও পাকিস্তানের পাশে ছিল তারা। এ ভাবে কোনও দেশের উপর সন্ত্রাসী হামলার দায় চাপিয়ে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করে তারা। কিন্তু এ দিন ভারতীয় বায়ুসেনা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করতেই, অবস্থান পাল্টে গেল তাদের। দুই দেশকেই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিল তারা।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest