নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: আজ ওয়ার্ল্ড আর্থ ডে। গুগল এই দিনটিকে চিহ্নিত করার জন্য একটি খুব সুন্দর ডুডল নিয়ে এসেছে। সেখানে পৃথিবীর ছ’টি বৈচিত্র্যকে দেখা যাচ্ছে। আজকের গুগল ডুডল পুরোটাই আর্থ ডে-কে উদ্দেশ্য করে বানানো। প্রত্যেক বছর ২২ এপ্রিল আর্থ ডে উদযাপিত হয়। এর উদ্দেশ্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যে জীববৈচিত্র্য রয়েছে তাকে তুলে আনা।
সোমবার মাঝ রাত থেকেই দুর্দান্ত এই গুগলটিতে দেখা যাচ্ছে একটি ইন্টার্য়াক্টিভ স্লাইড শো। ছ’টি প্রাণী ও উদ্ভিদের রোমাঞ্চকর তথ্য দিয়েই তৈরি এই ডুডল। প্রতিটি স্লাইডে ফুটে উঠেছে এক টুকরো করে পৃথিবী।ডুডলে দেখা যাচ্ছে ছ’টি এমন একেবারে স্বতন্ত্র বিশেষত্বকে যা এ পৃথিবীতেই পাওয়া যায়। তার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘতম, ক্ষুদ্রতম, প্রাচীনতম প্রভৃতি।
স্লাইডে ক্লিক করলে প্রথমেই দেখা যাচ্ছে, বৃহত্তম সামুদ্রিক পাখি অ্যালবাট্রোস উড়ে যাওয়ার ছবি।দ্য ওয়ান্ডারিং অ্যালবাট্রস পাখির কাছেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাখনা আছে। ফলে ওই পাখিগুলি একবার মাত্র ডানা ঝাপটে ১০০ মাইলের বেশি যেতে পারে।
কোস্টাল রেড উড বিশ্বের সবথেকে দীর্ঘতম গাছ।স্লাইডের নিচে ক্লিক করলে দেখা যাচ্ছে উপকূলীয় রেড উডের গাছটি মাটি ফুঁড়ে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। গাছটির ছবির পাশে লেখা ‘৩৭৭ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট আমি ৭৫ জন মানুষের উচ্চতার সমান। পৃথিবীর সব চেয়ে বড় গাছ আমিই।’
পরের স্লাইডে দেখা যাচ্ছে, সব চেয়ে ছোট ব্যাঙ ‘পাইডোফ্রেন এমুয়েনসিস’ এর ছবি। এর পাশে লেখা, ‘আমি দেখতে খুব ছোট। একটি কয়েনের মাপের আমিই সব চেয়ে ছোটো মেরুদণ্ডী প্রাণী।’ পিডোফ্রাইন অ্যামিউনেসিস পৃথিবীর সবথেকে ক্ষুদ্রতম ব্যাঙ। এর উচ্চতা মাত্র ৭.৭ মিলিমিটার।
এর পরেই রয়েছে আমাজ়ন বনের বৃহদাকার জলজ পদ্ম। আমাজন ওয়াটার লিলি পৃথিবীর সব থেকে বড় জলজ উদ্ভিদ।সেখানে লেখা, ‘আমি সব চেয়ে বড় জলজ পদ্ম, ছোটোখাটো চোহারার এক জন মানুষ আমার উপরে বসতেও পারে!
পরবর্তী স্লাইড ক্লিক করলে আসছে ৪০ কোটি বছর আগে থেকে পৃথিবীতে টিকে থাকা সামুদ্রিক মাছ কোয়েলাক্যান্থের ছবি।এরা খুবই বিরল। পৃথিবীতে ডাইনোসরের আমল থেকেই রয়েছে।
তার পরের স্লাইডে তুলে ধরা হয়েছে গভীর গুহার নিচে বসবাসকারী পাখাবিহীন ‘স্প্রিং টেল’ পতঙ্গসহ পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য। সেখানে লেখা, ‘যখন তুমি বিশ্বের সবচেয়ে গভীর গুহায় থাকবে, তখন চোখের কোনও প্রয়োজন হয় না।’ ডিপ কেভ স্প্রিংটেল হল আদিম চক্ষুবিহীন এক ধরনের পোকা। বিজ্ঞানীদের মতে এরাই সবথেকে গভীরতম স্থলজ প্রাণী।
ডুডলে সবশেষে লেখা রয়েছে, যাদেরকে সাথে নিয়ে আমাদের এই পৃথিবী, আমরা শুধুমাত্র সেই বৈচিত্র্যময়, অনন্য এবং অসাধারণ জীববৈচিত্র্যের কিছু ক্ষুদ্র অংশ তুলে ধরেছি।
১৯৭০ সাল থেকে পরিবেশ সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ‘বিশ্ব ধরিত্রী দিবস’ পালন করা শুরু হয়। গত ২১ বছর ধরে প্রতি বছর নানা ভাবে এই ডুডলের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বসুন্ধরা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর কাজে লেগে আছে গুগল। এই বছরে এমন ছ’টি প্রাণী এবং উদ্ভিদের সঙ্গে পরিচয় করানো হয়েছে মানুষের, যাদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণা খুবই কম।
আজকের এই ডুডলটি তৈরি করেছেন কেভিন লাফলিন। একটি সাক্ষাত্কারে লাফলিন জানিয়েছেন, ‘প্রতিটি জীবনই অসামান্য ও অমূল্য। প্রতিটি জীবনকেই উদযাপন করা উচিত। আমি যদি কারও মধ্যে সামান্যতম বিস্ময় বা কৌতুহলবোধের জন্ম দিতে পারি তা হলে আমার থেকে খুশি আর কেউ হবে না।”