Site icon The News Nest

ভুয়ো অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে, বিস্ফোরক অলোক বর্মা

sakshipost 2019 01 cecc1a96 c8c2 43b3 a5fa b1b3db355a68 PM Modi Panel CBIAlok Varma

সিবিআই আধিকর্তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর মুখ খুললেন অলোক বর্মা। তাঁর দাবি, মিথ্যে, গুরুত্বহীন এবং প্রমাণ নেই এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মাত্র দু’দিন আগেসিবিআই ডিরেক্টরের পদ ফিরে পান অলোক বর্মা। কিন্তু তার দু’দিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্যানেল তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে অন্যত্র বদলির সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহস্পতিবার রাতের সেই সিদ্ধান্তের পর রাতেই তাঁকে কার্যত গুরুত্বহীন পদে বদলি করে দেওয়া হয়। আর শুক্রবার বর্মা বলেন,’উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্যানেল সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে আমাকে সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমি সিবিআই-এর স্বতন্ত্রতা এবং অখণ্ডতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছিলাম। ফের দায়িত্ব নিতে বললে, আমি সেই চেষ্টাই করব।’
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন প্রাক্তন সিবিআই প্রধান৷ নাম না করে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন তিনি৷ অভিযোগে বলেন, ‘একাধিক বিষয়ে বাইরে থেকে আমার উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা হচ্ছিল৷ সিবিআই-এর মতো তদন্তকারী সংস্থার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছিল৷ আমি সংস্থার স্বতন্ত্রতার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম৷’
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চলতি সপ্তাহেই শর্তসাপেক্ষে সিবিআই প্রধানের পদে আবারও আসিন হন ১৯৭৯ ব্যাচের আইপিএস অফিসার অলোক বর্মা৷ কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বিভিন্ন অভিযোগে তাঁকে ওই পদ থেকে বরখাস্ত করে সিলেক্ট কমিটি৷ বর্মাকে পাঠান হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্ত দমকল ও জরুরী বিভাগের ডিজি করে৷ সিলেক্ট কমিটিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, লোকসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ৷ যদিও এক্ষেত্রে ওই কমিটি থেকে সরে দাঁড়ান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ৷ তাঁর হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টেরই বিচারপতি এ কে সিক্রি৷ প্রসঙ্গত, গত ২৩ অক্টোবর অলোক বর্মাকে সিবিআই অধিকর্তার পদ থেকে সরিয়ে দেয় কেন্দ্র৷ তাঁর পরিবর্তে সিবিআইয়ের অন্তবর্তী নির্দেশক করা হয় নাগেশ্বর রাও-কে৷ কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যান অলোক বর্মা৷ প্রায় তিন মাস ধরে মামলা চলার পর বর্মার পক্ষেই রায় দেয় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈইয়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ৷ বুধবার আবারও কাজে যোগ দেন অলোক বর্মা৷ এমনকী, সিবিআইয়ের পাঁচ আধিকারিককে অন্যত্র বদলিরও সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷ কিন্তু একদিনের মাথায় তাঁকে বরখাস্ত করে সিলেক্ট কমিটি৷
গত ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতে অলোক বর্মার সঙ্গেই ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সিবিআই-এর স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকে। রাকেশের অভিযোগের ভিত্তিতেই মূলত ছুটিতে পাঠানো হয় অলোক বর্মাকে। এ নিয়ে বর্মার বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার কোনওটা ভিত্তিহীন, কোনওটার তথ্যপ্রমাণ নেই, কোনওটা পুরোপুরি মিথ্যে। বর্মা বলেন,’এমন এক অফিসারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে সরানো হল, যিনি নিজেই অপরাধী।’
কিন্তু অলোক বর্মার বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ তুলেছিলেন রাকেশ আস্থানা? গত ২৪ অগস্ট ক্যাবিনেট সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়ে সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মার বিরুদ্ধে এক গুচ্ছ অভিযোগ লিখিত আকারে পেশ করেন আস্থানা। তাতে দুর্নীতি, তদন্তে হস্তক্ষেপ করা, ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সরকারি তরফে সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে ৩১ অগস্ট সেই ফাইল সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনকে (সিভিসি)পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সিভিসি ১০ সেপ্টেম্বর আস্থানাকে ডেকে পাঠায়। ওই দিনই আস্থানা প্রচুর নথিপত্র-সহ তথ্যপ্রমাণ সিভিসির কাছে জমা দেন। তার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করে সিভিসি।

Exit mobile version