দাসপুর: ভোটের মধ্যেই গয়নাকাণ্ডে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার তথা ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে জেরা করছেন সিআইডি আধিকারিকরা। শুক্রবার সকাল থেকেই প্রার্থীর দাসপুরের ভাড়া বাড়িতে চলছে জেরা। ভিতরেই আছেন সিআইডি আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, প্রাক্তন পুলিশ সুপারের মাদুরদহের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া কয়েক কোটি টাকা নগদ ও কয়েক কেজি গয়নার ব্যাপারেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি অফিসাররা। সকাল ১০টা ২০ মিনিটে জেরা শুরু করে প্রায় ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট জেরা করার পর দুপুর ২টো ১০মিনিটে শেষ হয় প্রথম দফার জেরা। জানা গিয়েছে, ফের দ্বিতীয় দফায় জেরা শুরু করেছেন সিআইডি আধিকারিকরা।
ভোটের জন্য বর্তমানে দাসপুর থানার চককৃষ্ণবাটীতে রাজকুমার মণ্ডলের বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন ভারতী। সেখানেই কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকছেন প্রার্থী। এখান থেকেই ভোট পরিচালনা করছেন তিনি।বৃহস্পতিবার ভবানী ভবনে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই ‘দাসপুর তোলাবাজি মামলা’য় তাঁকে জেরা করতে চায় সিআইডি। কিন্তু ভোটপ্রচারের ব্যস্ততার কারণে ভবানী ভবনে যাননি ভারতী।জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে তিনি আগামী শুক্রবার ভবানী ভবনে যাবেন।সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ফোন মারফত ভারতীর কাছ থেকে রাজ্য গোয়েন্দারা জেনে নেন, তিনি কখন বাড়িতে থাকবেন। এর পরই চারটি দলে ভাগ হয়ে সিআইডি আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ভারতী ঘোষের মাদুরদহের আবাসনে হানা দিয়ে পাঁচটা ট্রাঙ্ক ভর্তি গয়না ও নগদ টাকা উদ্ধার করেন সিআইডি অফিসাররা। তার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে সেখানে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় নগদ ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে সিআইডি। সেই সঙ্গে গয়না ও কয়েকটি মোবাইল ফোন। তা ছাড়া তল্লাশি চলে ভারতীর নাকতলার ফ্ল্যাটেও। সব মিলিয়ে নগদ টাকার পরিমাণ ৪ কোটিরও বেশি। ভারতীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৪, ৩৮৫, ৩৮৯ (তোলাবাজি), ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ (জালিয়াতি) ১১৯, ৪০৩ এবং ১২০ ( বি ) ধারায় মামলা রয়েছে। এই মামলার ব্যাপারে জিজ্জাসাবাদ করতেই এ দিন দাসপুরে এসেছেন সিআইডি আধিকারিকরা। যদিও ভারতী ঘোষ প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছেন, ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে শাসকদল।গত মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ রাজ্য সরকারের আবেদনের শুনানিতে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে ভারতী ঘোষকে।’ শুধু তাই নয়, রাজ্য পুলিশ নোটিশ জারি করে ডেকে পাঠাতে পারবে তাঁকেকে। তবে আগের মতোই তাঁর গ্রেফতারির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছেন, এখনই গ্রেফতার করা যাবে না ভারতীকে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৫ এপ্রিল। তত দিন পর্যন্ত আগের আদেশই বহাল থাকছে।