মসজিদে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে শুনানিতে রাজি সুপ্রিম কোর্ট, কেন্দ্র, ওয়াকফ বোর্ড ও মহিলা কমিশনের জবাব তলব

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

পুনে: মসজিদে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন পুনের দম্পতি ইয়াসমিন এবং জুবের আহমেদ পীরজাদা। সোমবার তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এসে ববদে মামলাটি শুনতে রাজি হন। এদিন আদালত কেবল মামলাটি শুনতে চেয়েছে তাই নয়, একইসঙ্গে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড, সেন্ট্রাল কাউন্সিল এর মত প্রতিষ্ঠানগুলিকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রিপোর্ট দিতে বলেছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রকেও সুপ্রিম কোর্ট জারি করেছে নোটিশ।

শবরীমালা প্রসঙ্গ উঠে আসে স্বাভাবিক কারণে। যেখানে মহিলাদের প্রবেশাধিকারে তীব্র বাধা আসে গেরুয়া শিবির থেকে। অমিত শাহ মহিলাদের প্রবেশাধিকারের বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবির কে উৎসাহিত করেন। সুপ্রিম কোর্ট মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়ার পরও দিনের পর দিন তাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। যদিও মসজিদে মহিলাদের প্রবেশের ক্ষেত্রে এমন একটিও উদাহরণ নেই। শবরীমালার আগেই হাজি আলি দরগা নিয়ে এমন একটি মামলা হয়।সেখানে অবশ্য মুসলিম মহিলাদের প্রবেশাধিকারের বিষয়টি মেনে নেন মুসলিমরা। তা নিয়ে বিশেষ কোন আলোড়ন অযথা তৈরি করা হয়নি। যেমনটা হয়েছিল শবরীমালায়।রাজনৈতিক সচেতন মানুষের বক্তব্য হলো, রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর কারণে তা এমন মারাত্মক হয়ে উঠেছিল। তা না হলে বিষয়টি নিয়ে গেরুয়া শিবির এত মাতামাতি করতো না।

ইসলামে কোথাও মহিলাদের মসজিদে প্রবেশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা নেই। বহু মসজিদে মহিলারা নামাজ পড়েন। সেখানে কেউ বাধা দেন না। ইসলাম এই বাধাদানের অনুমোদন দেয়নি। তাই যেখানে ইসলাম বাধা দেয়নি, সেখানে বিষয়টিকে ইসলামের ঘাড়ে চাপানো একেবারেই যুক্তি সংগত হবে না। তবে একথা ঠিক যে সব ধর্মেই কিছু রক্ষণশীল মানুষ থাকেন। যারা কখনোই মূল বিষয়টি কে যুক্তি-মানবিকতা ও আইনের দৃষ্টিতে দেখেন না। ইসলামে যে এমন কিছু মানুষ নেই তা নয়।কিন্তু তাদের এই রক্ষনশীলতার দায় ইসলামের উপর চাপিয়ে দেওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।এমনটাই মনে করছেন ইসলাম জানা মানুযজন।

আদালত এদিন প্রশ্ন তোলে, মসজিদ কিম্বা মন্দির অথবা চার্চ কি রাষ্ট্রের। কেও কি ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিজেদের মৌলিক অধিকার দাবি করতে পারেন। যখন বিষয়টি রাষ্ট্রের নয়, তখন কি আমরা তাতে কোনো নির্দেশ জারি করতে পারি। আমরা কি পুলিশকে কখনো বলতে পারি যে অন্যের বাড়িতে প্রবেশ করাতে তারা আপনাকে সাহায্য করুক। মঙ্গলবার বেঞ্চ এই প্রশ্নগুলি তোলে।

একই সঙ্গে বলা হয় যেহেতু শবরীমালার ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালত মামলাটি শুনেছে, তাই এক্ষেত্রেও মামলাটি শোনা হবে। বহু মসজিদেই মহিলারা নামাজ পড়েন পুরুষের সঙ্গে। এমনকি এই কলকাতা শহরে একাধিক মসজিদে মহিলারা মসজিদে নামাজ পড়েন। সুতরাং এটি নিয়ে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করার বিশেষ জায়গা নেই আর এই ইস্যুটিকে শবরীমালা সমন্তরাল করে দেখানোর জায়গা নেই। যদি মহিলাদের মসজিদে প্রবেশ অধিকার নিষিদ্ধ থাকত অথবা মুসলিমরা এই প্রবেশাধিকারের বিরুদ্ধে প্রবল বিরোধিতা করতেন, তাহলে অবশ্যই তা চর্চার বিষয় হত। হাজি আলির সঙ্গে শবরীমালা তুলনা হলেও মসজিদে প্রবেশ অধিকারের বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন বিষয়। কারণ মসজিদে মহিলা প্রবেশাধিকার বর্তমানেও বহাল রয়েছে।

অনেকের মতে অযথা মুসলিমদের রক্ষণশীল প্রমাণের চেষ্টা হচ্ছে। বরাবরই রাজনৈতিক ইস্যুকে চরিতার্থ করতে গিয়ে সংখ্যালঘুদের কাওকে কাওকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে। অনেকের ধারণা এমনি। ইয়াসমিন ও তাঁর স্বামী জানেন বহু মসজিদে মহিলাদের প্রবেশাধিকার রয়েছে। তবে হ্যাঁ শালীনতার সুবিধার্থে মুসলিম মহিলাদের এবং পুরুষদের গায়ে গায়ে অথবা ঘনিষ্ঠভাবে বসার ক্ষেত্রে আপত্তি পোষণ করা হয়। যেটিকে সুস্থ ও সচেতন মানুষ বাস্তবোচিত বলে মনে করেছেন। অনেকের বক্তব্য অনেকদিন ধরে মুসলিম কোনো ইস্যু কে সামনে আনা যায়নি।ফলে রাজনৈতিক চর্চায় মুসলিমদের সেইভাবে সংযুক্ত করা যাচ্ছে না মিডিয়ায়।তাৎক্ষণিক তিন তালাক কে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানো হয়েছিল।দুর্ভাগ্যের বিষয় হল আজ পর্যন্ত এই তাৎক্ষণিক তিন তালাক নিয়ে আইন প্রণয়ন করতে পারেনি মোদি সরকার।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest