Site icon The News Nest

মুখ্যমন্ত্রীকে ‘প্রধানমন্ত্রীর পুতুল’ বলায় কারাদণ্ড, অবশেষে মুক্তি পেলেন দেশদ্রোহে অভিযুক্ত মণিপুরী সাংবাদিক

manipur2

শিলং: ভোটের মুখে জেল থেকে ছাড়া পেলেন মণিপুরের সাংবাদিক কিশোরচন্দ্র ওয়াংখেম৷ একটি টেলিভিশন চ্যানেলে কর্মরত কিশোরচন্দ্রর মতামত, কার্যপদ্ধতি দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে, এই সন্দেহে গত নভেম্বর থেকে তাঁকে কারাবন্দি করা হয়েছিল৷ একাধিকবার জামিনের আবেদন করলেও, তা মঞ্জুর হয়নি৷ কিন্তু এবার সামনেই নির্বাচন৷ ওয়াংখেমের জেল বন্দির ঘটনাকে হওয়াকে ইস্যু খাড়া করে ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে৷ তাই সবদিক বুঝেশুনে হাই কোর্ট তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিল৷ তুলে নেওয়া হল দেশদ্রোহের মামলাও৷

কিশোরচন্দ্র ওয়াংখেম৷ মণিপুরের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আইএন টিভির সঞ্চালক, সাংবাদিক৷ ঘটনার সূত্রপাত মণিপুর সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মীবাইয়ের জন্মবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠান ঘিরে। সেই অনুষ্ঠানটিকে নিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন কিশোরচন্দ্র ওয়াংখেম। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘এই রাজপুত যোদ্ধার সঙ্গে মণিপুরের কোনও যোগাযোগ নেই। অথচ মণিপুরের স্বাধীনতা যোদ্ধাদের ভুলে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ আরএসএস-বিজেপির মতাদর্শ অনুসরণ করে ঝাঁসির রানির জন্মবার্ষিকী পালনে উদ্যোগী হয়েছেন। ’’ এই জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ‘প্রধানমন্ত্রীর পুতুল’ বলেও উপহাস করেছিলেন ওই ভিডিয়োতে। এ ছাড়া তাঁকে গ্রেফতার করার চ্যালেঞ্জও ছুড়েছিলেন কিশোরচন্দ্র।২৭ নভেম্বর তাঁকে প্রথম আটক করে মণিপুর সরকার। তাঁর কার্যকলাপে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, এই অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। মণিপুরের রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লাও তাঁর আটকের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেন। কিশোরচন্দ্রের গ্রেফতারের পরই ২ জানুয়ারি কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধী তাঁর পরিবারকে চিঠিতে লেখেন, “রাষ্ট্র শক্তি ব্যক্তিগত মত প্রকাশে বাধা দিচ্ছে। বিগত কয়েক মাস ধরেই আমরা দেখছি মণিপুরের নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করার চেস্তা চালাচ্ছে বিজেপি সরকার। যারাই সরকারকে প্রশ্ন করছে, জেলে যেতে হচ্ছে তাঁদের”।

স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে কার্যত একাই লড়েছিলেন স্ত্রী রঞ্জিতা এলানবাম৷ ছোট সন্তানদের নিয়ে কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হয়েছে, তবু স্বামীকে নিরাপরাধ প্রমাণ করার জেদ তিনি ছাড়েননি৷রঞ্জিতার সংগ্রাম এতদিনে সার্থক হতে চলেছে৷ সোমবার মণিপুর হাই কোর্ট ওয়াংখেমকে মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে৷ তা হাতে নিয়েই রঞ্জিতা বললেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা চলছিল, আদালত তা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে৷ আমরা ওকে দ্রুতই জেল থেকে ঘরে ফিরিয়ে আনব৷’ আগামী ১৮ এপ্রিল মণিপুরে লোকসভা ভোট৷ তার আগে ওয়াংখেমের পক্ষে আদালতের এই নির্দেশেও রাজনীতি দেখছেন অনেকে৷ ভোটের মুখে শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা করায় এক সাংবাদিককে জেলবন্দি রাখলে, তা বিজেপির পক্ষেই খুব একটা ভাল হবে না৷ তা বুঝেই এমন সিদ্ধান্ত বলে সমালোচনা করছেন অনেকে৷

 

Exit mobile version