মথুরা: ২০১৪ সালের লোকসভা হোক বা ২০১৭ সালের বিধানসভা – উত্তরপ্রদেশ বাসী দু’হাত ভরে ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। দেশের সব থেকে বড় রাজ্য অনেকটাই ভরসা যুগিয়েছেে গেরুয়া শিবিরকে কিন্তু এবার যেন উত্তরপ্রদেশ বাসী আলাদা ‘মুডে’ । মঞ্চে বিজেপির স্টার ক্যাম্পেনাররা থাকা সত্ত্বেও ভিড় হচ্ছে না জনসভাগুলিতে। গত বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশেের মেরটে ভোট প্রচার করতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই সভায় ভীড় হয়নি একেবারেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে খালি চেয়ারের সেই সব ছবি। সাংবাদিক মায়া মীরচান্দানি নিজের টুইটারে শেয়ার করেছেন বেশ কিছু ছবি। তাতেে দেখা দেখাা যাচ্ছে মঞ্চের সামনে ভিড় থাকলেও পিছন দিক গোটাটাই খালি।
Crowds in the front, rows and rows of empty chairs right behind them as PM Modi touches down to address the BJP’s campaign kick off rally in Meerut. #Elections2019 #UttarPradesh pic.twitter.com/ZNUO03TTb8
— Maya Mirchandani ?? (@maya206) March 28, 2019
একই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশেের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও মথুরার সাংসদ হেমা মালিনীর ক্ষেত্রেও। মোদীর সভার দুদিন আগে মথুরাতে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেেন হেমা। সঙ্গে ছিলেন যোগী আদিত্যনাথ।গত সোমবার সেই সভায় ‘ড্রিমগার্ল’কে দেখতে ভীড় হয়নি এক রত্তিও। সাংবাদিক শ্রীনিবাসন জৈন সেই সব ছবি শেয়ার করেছেন নিজের টুইটারে। যদিও মথুরার জন্য কি করেছেন তা মনে নেই স্বয়ং সাংসদের।আড়াইশোবার নাকি এসেছেন মথুরায়। বৃন্দাবনে থেকেছেন ৩–৪ দিন। প্রচুর কাজ করেছেন। অথচ কী কাজ করেছেন, তার ফিরিস্তি দিতে পারলেন না সাংসদ হেমা মালিনী! বারবার চেষ্টা করেও, মনে পড়েনি তাঁর। সাংবাদিকদের সামনে শুধু ‘অনেক করেছি’ বলেছেন বহুবার। মথুরা থেকে আরও একবার প্রার্থী করায় দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে নিজেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন। সেখানে মথুরার জন্য কত কাজ করেছেন, একতরফা বলে যান। কী কী কাজ? প্রশ্ন করতেই অপ্রস্তুত হেমা। বললেন, এত করেছেন, যে মনেই পড়ছে না! যোগ করলেন, মথুরা বিরাট শহর। ৩ হাজার বর্গ কিমি জুড়ে। তাতে ১ হাজার গ্রাম। ফলে কেন্দ্রে প্রতিটি ভোটদাতাকে খুশি করা অসাধ্য।
এমন আরও পরস্পরবিরোধী মণিমুক্তো ছড়িয়েছেন ৭০ বছরের হেমা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, সপা সভাপতি অখিলেশ যাদব বলেন, ‘বিকাশ গায়েব হ্যায়’। সেই প্রসঙ্গে তাঁর পাল্টা, ‘অখিলেশ নিজেই এসে দেখে যান বিকাশ অর্থাৎ উন্নয়ন হয়েছে কি না। মথুরা তো খুব বড় কেন্দ্র নয়!’ আবারও সামাল দিতে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘মানে সারা দেশের তুলনায় মথুরা তো অতি ক্ষুদ্র জায়গা।’ নিজের সাফাই দিয়ে জানিয়েছেন, পাঁচ বছর খুবই কম সময়। এর মধ্যে মথুরার ভোল পাল্টানো সম্ভব নয়। সাংসদকে বহিরাগতই মনে করে মথুরাবাসী। বিরোধীরা তো বটেই। সপা বলে বেড়াচ্ছে লড়াই হবে বহিরাগত বনাম ব্রজবাসীর। হেমার পাল্টা, ‘হ্যাঁ আমার মুম্বইয়ে বাড়ি আছে। তাতে সমস্যা কোথায়? বৃন্দাবনেও বাড়ি আছে। সুতরাং আমি বৃন্দাবনবাসীও।’
কোনও সরকারি অনুষ্ঠানেই তাঁকে পাওয়া যায় না। এর জবাবে আরও বেফাঁস স্বপ্নসুন্দরী। জানালেন, তাঁর কেন্দ্র অতি পবিত্র, ধার্মিক স্থান। প্রায় রোজই কোনও অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। সবেতে হাজিরা দেওয়া অসম্ভব। বলেছেন, ‘তাছাড়া মানুষ বোঝেন আমি নিতান্তই সাংসদ নই। অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী। আমার পক্ষে এখানে ২৪ ঘণ্টা পড়ে থাকা সম্ভব নয়। ১০ দিনের জন্য এসেও সব কাজ করে দিতে পারি।’
Hema Malini, Yogi Adityanath on stage in Mathura. But empty chairs at the back? Watch @OnReality_Check #ElectionEdition from Battleground Uttar Pradesh. 8:30pm NDTV 24×7 pic.twitter.com/JFmEe4xsfR
— Sreenivasan Jain (@SreenivasanJain) March 25, 2019
ফিরে আসা যাক খালি চেয়ার ইস্যুতে। এর আগের দিন অর্থাৎ গত রবিবার অমিত শাহ’র সভাও ছিল ভিড়শূন্য। আগ্রাতে হওয়া সেই জনসভায় সাংবাদিকদের ছবি তোলা আটকাতে তড়িঘড়ি খালি থাকা চেয়ারগুলি সরিয়ে দেন বিজেপি কর্মীরা।স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে – বিকাশের বার্তা কি আর শুনতে চাইছেন না ইউপিবাসী? নাকি বিজেপির আকর্ষণ কমে গিয়েছে ৫ বছরেই ?