#নয়াদিল্লি: ঘড়ির কাঁটায় সন্ধে সাতটা বেজে তিন মিনিট। দ্বিতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে শপথ নিলেন ৫৭ জন মন্ত্রী। যার মধ্যে ২৪ জন শপথ নিলেন পূর্ণ মন্ত্রী হিসাবে। ক্যাবিনেটে এলেন অমিত শাহ। কিন্তু গত বারের বেশ কয়েক জন মন্ত্রীরই ঠাঁই হল না ক্যাবিনেটে। বাদ পড়লেন গত বারের অর্থমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী, রেলমন্ত্রীরা।
সুষমা স্বরাজ
শারীরিক কারণ দেখিয়ে এ বার নির্বাচনে দাঁড়াননি ৬৭ বছরের এই প্রবীণা। কিন্তু তাও মনে করা হচ্ছিল এ বারও হয়তো মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী। কিন্তু সেটা হয়নি। গত পাঁচ বছরে সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয় এই নেত্রী এ বার মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেননি। ভবিষ্যতে তাঁকে মন্ত্রীসভায় নিয়ে আসা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
অরুণ জেটলি
শারীরিক কারণ দেখিয়ে নিজেই এ বার মন্ত্রী হতে চাননি ৬৬ বছরের অরুণ জেটলি। তাঁর দাবি, গত ১৮ মাসে গুরুতর অসুস্থতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন জেটলি। এমনকি গত ফেব্রুয়ারিতে বাজেট পেশ করতে পারেননি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।
রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর
মন্ত্রীসভা থেকে ৪৯ বছর বয়সী এই নেতাকে বাদ দেওয়ার কারণ জানা যায়নি। আগের জমানায় ক্রীড়া মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে তাঁকে মন্ত্রী না করে, রাজস্থান বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে।
মানেকা গান্ধী
নারী ও শিশু সুরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা মানেকা এ বার মন্ত্রী হচ্ছেন না। বদলে তাঁকে প্রো-টেম বা অন্তর্বর্তীকালীন স্পিকার হিসেবে দেখা যেতে পারে। প্রো-টেম স্পিকারের দায়িত্ব হল স্পিকার নির্বাচনের আগে পর্যন্ত নতুন লোকসভার দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। সব সাংসদের শপথবাক্যও পাঠ করাবেন তিনি।
উমা ভারতী
লোকসভা নির্বাচনে না লড়ার সিদ্দান্ত নিয়েছিলেন উমা ভারতী। তাঁর বদলে স্বচ্ছ গঙ্গা অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চান তিনি।
সুরেশ প্রভু
২০১৪ সালে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে প্রথমে রেলমন্ত্রকের দায়িত্ব পান তিনি। তাঁর জমানায় রেলে কিছু উল্লেখযোগ্য উন্নতিও হয়। এমন কি টুইটারে রেল পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগের জবাবও দিতেন তিনি। কিছুটা প্রচারবিমুখ থাকা রাজ্যসভার এই সাংসদের এ বার আর মন্ত্রীসভায় জায়গা হল না।
কেজে আলফোন্স
কেরল বিজেপির একমাত্র মুখ ছিলেন আলফোন্স। কেন্দ্রীয় পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু এ বার আর হল না মন্ত্রী হওয়া। কারণ এর্নাকুলম কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে গো হারান হেরেছেন তিনি। কংগ্রেস এবন সিপিএম প্রার্থীদের পেছনে তৃতীয় স্থানে ছিলেন তিনি।
জয়ন্ত সিনহা
প্রথমে ছিলেন অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রী। পরে চলে গেলেন অসামরিক বিমানপরিবহণ মন্ত্রকে। তাঁকে নিয়ে বিতর্কও কোনো কম হয়নি। কিন্তু বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রীর ছেলে যশবন্ত সিনহার ছেলের এবার ঠাঁই হল না মন্ত্রীসভায়।
- এছাড়া মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না শিবপ্রতাপ শুক্লের, অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি। জায়গা হল না জুয়েল ওরাঁওয়ের। গত বার আদিবাসী সংক্রান্ত দফতরের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন অনুপ্রিয়া পটেল৷ ছিটকে গেলেন তিনিও।
- মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না জে পি নাড্ডার। পরবর্তী বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির পদে জগৎ প্রকাশ নাড্ডার নাম নিয়ে জল্পনা ছিল প্রথম থেকেই৷ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি প্রায় পাঁচ বছর।
- মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না এস অহলুওয়ালিয়ার। পানীয় জল ও নিকাশি দফতরের দায়িত্বে ছিলেন, পরবর্তীতে ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি দফতরও সামলেছেন। এ বার রাজ্য থেকে বিপুল জয়ে তাঁকে মন্ত্রিসভায় আশা করেছিলেন অনেকেই।
- মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না রাধামোহন সিংহের। গত বারের মন্ত্রিসভায় কৃষিমন্ত্রকে রাধামোহন সিংহ নামটি ছিল একটি চমক৷ মোদীর দ্বিতীয় বারের মন্ত্রিসভার তালিকা থেকে নাম কাটা গিয়েছে তাঁরও৷
- মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না চৌধরি বীরেন্দ্র সিংহের। গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত দফতরের মতো মন্ত্রক সামলেছিলেন তিনি প্রায় দু’বছর।
- মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না বিজয় সাম্পলা-র। সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। কিন্তু এ বছরের মন্ত্রিসভায় মিলল না জায়গা।
- মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না অনন্ত গীতের। শিবসেনা নেতা অনন্ত গীতে সামলেছিলেন ভারী শিল্প ও পাবলিক এন্টারপ্রাইজের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক।
- মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না সুভাষ ভামরের। প্রতিরক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
- মন্ত্রিসভায় জায়গা হল না মহেশ শর্মার। সংস্কৃতি দফতরের স্বাধীন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন একটা সময়ে। এ ছাড়াও বনমন্ত্রক, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু এ বছরের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি তিনি।