Site icon The News Nest

যৌন নিগ্রহ কাণ্ডে ক্লিনচিট প্রধান বিচারপতিকে, প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টের বাইরে বিক্ষোভ আইনজীবী-সমাজকর্মীদের

sc

#নয়াদিল্লি: যৌন নিগ্রহকাণ্ডে প্রধান বিচারপতিকে ক্লিনচিট দেওয়ায় এ বার তেতে উঠল সুপ্রিম কোর্ট চত্বর। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন একদল আইনজীবী। তাতে সামিল হন বহু মহিলা সমাজকর্মীও। দিল্লি পুলিশ বিক্ষোভ থামাতে গেলে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। তার জেরে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে বিক্ষোভের সময় ঘটনাস্থলে হাজির কয়েকজন সাংবাদিককেও।

দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক মধুর বর্মার দাবি, সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের মতো সংবেদনশীল জায়গাগুলিতে সারা বছর ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তা লঙ্ঘন করেই এ দিন সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তা সত্ত্বেও শুরুতে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ সরিয়ে নিয়ে যেতে আর্জি জানিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি বিক্ষোভকারীরা। তাই তাঁদের আটক করা হয়।

কিছুদিন আগে, ৩৫ বছর বয়সী এক মহিলা (জুনিয়র কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট) সুপ্রিম কোর্টে ২২ বিচারপতিকে তাঁর অভিযোগের কথা লিখিত জানান৷ সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, ওই মহিলার অভিযোগ ছিল, গত বছর ১০ এবং ১১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ তাঁর বাসভবনে ওই মহিলাকে যৌন হেনস্তা করেন৷ ওই মহিলার অভিযোগ অনুযায়ী, তাকে আলিঙ্গন করে তার ওপর জোরজবরদস্তি করা হয়৷ এবং সে চলে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি৷ কভারিং লেটারে ওই মহিলা একটি এফিডেভিটে বিস্তারিত জানান সবকিছু৷ তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি৷ সেক্রেটারি জেনারেল সঞ্জীব কুমার সুধাকর কালগাঁওকর বলেন, এই অভিযোগ গগৈয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য আনা হয়েছে৷ এগুলির কোনও ভিত্তি নেই৷ এই অভিযোগ থেকেই সোমবার ক্লিনচিট পান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি৷ তিন বিচারপতির প্যানেল তাঁকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়৷

গগৈয়ের বিরুদ্ধে যে প্যানেল বসে তাতে ছিলেন তিন বিচারপতি৷ বিচারপতি এসএ বোবদে, বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা ও বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই মামলার শুনানিতে তিন বিচারপতিই গগৈকে ক্লিনচিট দেন৷ তবে শুনানির মাঝপথে নিজেই সরে দাঁড়ান শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা ওই মহিলা৷ তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে খুশি নন তিনি বলে জানান৷ তাঁর মত ছিল এই বিচার প্রক্রিয়ায় ন্যায় মেলার সম্ভাবনা কম৷অভিযোগকারিণীর এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মহিলা সমাজকর্মী ও আইনজীবীরা৷ তাদের দাবি তদন্তে প্রভাব বিস্তার করে সঠিক তথ্যকে ধামা চাপা দেওয়া হয়েছে৷ ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া উইমেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যানি রাজা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, যে পদ্ধতিতে সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে ক্লিনচিট দিয়েছে, তাতেই আপত্তি তাঁদের। অভিযোগকারিণী তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন ওই মহিলা কর্মী প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।

 

Exit mobile version