Site icon The News Nest

প্রকাশের আগেই রাফাল দুর্নীতি নিয়ে লেখা বই বাজেয়াপ্ত চেন্নাইয়ে, পরে ফেরত দিয়ে মুখ পুড়ল কমিশনের

rafal book

চেন্নাই: নির্বাচনের আগে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ল নির্বাচন কমিশন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চেন্নাইয়ের তেনাম্পেতে তামিল বই প্রকাশনা সংস্থা ‘ভারতী পুস্তকালায়ম’ থেকে ‘নাত্তাই উলুক্কুম রাফাল বেরা উঝাল’(রাফাল: দ্য স্ক্যাম দ্যাট শুক দ্য নেশন)নামের একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠান ছিল। ফরাসি সংস্থা দাসোঁর সঙ্গে ৩৬টি যুদ্ধ বিমান কেনা নিয়ে মোদী সরকারের চুক্তির খুঁটিনাটি তুলে ধরা হয়েছে ওই বইয়ে। তদন্তে নেমে ওই চুক্তিতে যে সমস্ত অনিয়ম ধরা পড়ে, তারও সবিস্তার উল্লেখ রয়েছে। সমাজকর্মী এস বিজয়ন বইটির লেখক। চেন্নাইয়ে একটি তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত তিনি। এখনও পর্যন্ত পুস্তিকার আকারে ৪০টি বই লিখেছেন তিনি। রাফাল দুর্নীতি নিয়ে তাঁর এই বইটিও পুস্তিকার আকারেই ছাপা হয়েছিল। ‘দ্য হিন্দু’ সংবাদপত্রের এন রাম, যাঁর হাত ধরে রাফাল চুক্তির অনিয়ম উঠে এসেছিল, বইটি প্রকাশ করার কথা ছিল তাঁর।

ফোনে সেই খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল নিয়ে মঙ্গলবার সকালে আচমকাই ওই প্রকাশনা সংস্থায় হাজির হন তামিলনাড়ুর থাউজ্যান্ড লাইটস লোকসভা কেন্দ্রের অ্যাসিসট্যান্ট একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার এস গণেশ। তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধির আওতায় বই প্রকাশের অনুষ্ঠান করা যাবে না। বিক্রি করা যাবে না একটা কপিও। বইটি নিষিদ্ধ করতে হাতে লেখা একটি চিঠিও ধরান তিনি প্রকাশককে। তবে তাতে কোনও স্ট্যাম্প ছিল না। যার পর প্রকাশক ও ওই সংস্থার কর্মীদের আপত্তি সত্ত্বেও ১৪২টি বই বাজেয়াপ্ত করে তুলে নিয়ে যান।

বই বাজেয়াপ্ত করার ভিডিও চিত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে দেশ জুড়ে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তামিলনাড়ুর মুখ্য নির্বাচনী অফিসার জানান, আমরা বই বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিইনি। আমরা চেন্নাইয়ের জেলা নির্বাচনী অফিসারকে বলেছিলাম, তারা যেন বিষয়টির ওপরে নজর রাখে।বই প্রকাশের নির্ধারিত সময়ের আগেই পুলিশ বাজেয়াপ্ত হওয়া বইগুলি দোকানে ফেরত দিয়ে যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্ধারিত সময়েই বই প্রকাশিত হয়। বই প্রকাশ করেন ‘দি হিন্দু’ সংবাদপত্রের সম্পাদক এন রাম। তাঁর কাগজেই রাফায়েল চুক্তিতে অস্বচ্ছতা নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এন রাম বলেন, এই ঔদ্ধত্য মেনে নেওয়া যায় না। আমি শুনেছি বইয়ের কয়েকশ কপি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই দেখেছে, বই বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর ঘটনা। কোন আইনে বই প্রকাশের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিল জানি না। বইগুলোই বা বাজেয়াপ্ত করল কোন আইনে? আমার মনে হয়, প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রভাবিত করা হচ্ছে।’’ বিষয়টি নিয়ে ওই প্রকাশনা সংস্থাকে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। প্রকাশনা সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, স্থানীয় একটি স্কুলে প্রথমে বইটি প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তার অনুমতি মেলেনি। যার পর নিজেদের দফতরেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বাধ্য হন তাঁরা।

Exit mobile version